১ নভেম্বর থেকে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমে যাচ্ছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো
২৭ অক্টোবর ২০২০ ১৩:৩৯
ঢাকা: মাধ্যমিক শ্রেণিগুলোর জন্য তৈরি ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসটি নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে কার্যকর করা হবে। নতুন এই পাঠ্যসূচিতে পরীক্ষার বদলে অ্যাসাইনমেন্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতি স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীরা যেখানে রয়েছে সেই এলাকার নিকটতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে একই প্রতিষ্ঠানে অ্যাসাইনমেন্ট জমাও দেওয়া যাবে। প্রতি সপ্তাহেই শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রোববার (২৫ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক একটি নির্দেশনাও জারি করেন। যেখানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্ধারিত সময়ে অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়বস্তু জানিয়ে দেবে বলেও জানানো হয়।
মাউশির নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যক্ষ শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ প্রোগ্রামের মাধ্যমে পাঠদান এবং স্কুল পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইন শ্রেণি পাঠদান ও অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও পাঠদান অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখন ফল অর্জন করল তা মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই মূল্যায়ন যেন তাদের ওপর কোনো মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করতে না পারে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেরাও যেন তাদের পাঠ অগ্রগতি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে, সেজন্য সার্বিক দিক বিবেচনা করে আটটি নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।
নির্দেশনাগুলো হলো
১. এনসিটিবি কর্তৃক নির্ধারিত ৩০ কর্মদিবসের সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে। সিলেবাস ওয়েবসাইটে যথাসময় প্রকাশ করা হবে।
২. এনসিটিবি সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় নির্ধারিত সিলেবাস থেকে অ্যাসাইনমেন্টের (নির্ধারিত কাজ) জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছে। বিষয়বস্তু অনুযায়ী প্রণীত অ্যাসাইনমেন্ট মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে প্রতি সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
৩. অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া/নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান শ্রেণিভিত্তিক কর্মসূচি নির্ধারণ এবং আলাদাভাবে প্রদান/গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন। এক্ষেত্রে অনলাইনের সাহায্যে/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠান প্রধান/অভিভাবক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অ্যাসাইনমেন্ট প্রেরণ ও গ্রহণ করবেন।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অ্যাসাইনমেন্ট ব্যতীত মূল্যায়ন সংক্রান্ত অন্য কোনো কার্যক্রম (যেমন পরীক্ষা নেওয়া, বাড়ির কাজ দেয়া ইত্যাদি) গ্রহণ করতে পারবেন না।
৫. অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিক চিহ্নিত করবেন এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিয়ে কাঙ্ক্ষিত শিখন ফল অর্জনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা শিক্ষকদের মূল্যায়নসহ অ্যাসাইনমেন্টগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন।
৬. কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে স্থানান্তরিত শিক্ষার্থীরা নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ/জমা প্রদান করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অভিভাবক/শিক্ষার্থী তার নিকটবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
৭. এই কার্যক্রম ১ নভেম্বর থেকে শুরু হবে।
৮. নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল আঞ্চলিক উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সমন্বয় করবেন।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান (এইচএসসি) এবং জেএসসিসহ সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা।