আলু-পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের লাগামছাড়া দামে ক্ষুব্ধ সংসদীয় কমিটি

ঢাকা: আলু-পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। কমিটির বৈঠকে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছে মন্ত্রণালয়। এজন্য দুই বছর সময় প্রয়োজন বলেও জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংসদীয় কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ। বৈঠকে কমিটির সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, তাহজীব আলম সিদ্দিকী, সেলিম আলতাফ জর্জ ও সুলতানা নাদিরা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রথমে পেঁয়াজ, এরপর আলুর দাম নিয় অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এভাবে একটার পর একটা নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় কী করছে? তাদের কি আগে থেকে কোনো জরিপ থাকে না যে বছরে কোন পণ্য কতটা উৎপাদন হলো আর চাহিদা কত? সেই হিসাব থাকলে তো আগে থেকেই চাহিদা পূরণের পরিমাণ পণ্য আমদানি করে রাখা যায়। সেক্ষেত্রে বাজারে সংকট তৈরি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। এর তো একটা মাস্টারপ্ল্যান থাকবে, হঠাৎ করেই দাম বাড়বে কেন?

সংসদীয় কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী পেঁয়াজ ও আলুর উৎপাদনের সঙ্গে বাজারের চিত্রের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। এসময় কমিটির সদস্যরা বলেন, সাধারণ মানুষ তো বাস্তবতা শুনবে না। তারা দেখবে বাজারের কী অবস্থা। পরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। সেলফ সাফিশিয়েন্ট হতে হবে। এজন্য দুই বছর সময় লাগবে। দুই বছরের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে।

বৈঠকে উপস্থিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, বাণিজ্য, কৃষি, খাদ্য, শিল্প ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নিয়ে একটি মন্ত্রণালয় টিম গঠন করা হয়েছে। একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে মাস্টারপ্ল্যান করব। উৎপাদন বাড়াতে কী কী করতে হবে, আমদানি করতে হলে আগে থেকেই কিভাবে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া যায়— এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হবে।

সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আলু ও পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল রাখতে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে কোন পণ্যের চাহিদা কতটুকু, তা নির্ধারণ করে পণ্য মজুতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা দিলে তা মোকাবিলা করার জন্য অর্থ, বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবদের সমন্বয়ে বৈঠক করে সমস্যা চিহ্নিত করে উত্তরণের পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করছে সংসদীয় কমিটি।

গত রমজান মাসের মতো আসছে রমজান মাসেও যেন দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকে, সে জন্য এখন থেকেই ভোক্তাদের নিত্যপণ্যের চাহিদা পূরণের জন্য আগাম কার্যক্রমও গ্রহণ করতে বলা হয়েছে বৈঠকে। সেক্ষেত্রে ডাল, তেল, চিনি, ছোলা, খেজুর ও পেঁয়াজের মতো পণ্যের মজুত নিশ্চিত করতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।

আলু-পেঁয়াজের দাম চাহিদা নিরূপণ দ্রব্যমূল্য পণ্যের মজুত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি