ঢাকা: ‘আমার পণ্য আমার দেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগানে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২০। এসএমই ফাউন্ডেশন ও অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশের (এএফডিবি) উদ্যোগে তৃতীয়বারের আয়োজিত এই ফেস্টিভ্যালটি এবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে।
বুধবার (২৮ অক্টোবর) শুরু হওয়া এই অনলাইন প্রদর্শনী চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। দেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি রোধকরণ এবং দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত এই উৎসব আয়োজন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দেশের শতকরা ৯০ ভাগই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর গুরুত্ব অপরিসীম। সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও এসএমই খাতের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তাঁত বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। তাঁতীরা দেশের মানুষের পোশাকের চাহিদা মিটিয়ে তা বিদেশেও রফতানি করছে। পণ্যভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল আয়োজন প্রমাণ করে, বাঙালি ঐতিহ্যের শেকড়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এখনো রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের কদর ও চাহিদা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যগুলোকে জিআই পণ্যের তালিকায় যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় পণ্য চিহ্নিত করে সরকারকে সহায়তা করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব কে এম আলী আজম বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি ও বিলুপ্তি রোধে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তাঁত শিল্পের বিলুপ্তি রোধে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁতীদের উপযুক্ত প্রযুক্তি জ্ঞানসহ প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে তারা টেকসই পণ্য তৈরি করবে পারবেন। জিআই পণ্যের তালিকায় ঐতিহ্যবাহী পণ্যগুলোকে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সরকারের তৈরি করা ডিজিটাল অবকাঠামোর কল্যাণেই কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটেও অনলাইনে এই মেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্য ২০২১ ও ২০৪১ অর্জনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এসএমই উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, পণ্য বাজারজাতকরণ এবং অর্থায়নের সমস্যা সমাধান করতে কাজ করে যাচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
আয়োজকরা আরও জানান, মেলার অনলাইন পেজে বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শো’র পাশাপাশি প্রায় ৬০টি অনলাইন স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ি-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ী, টাঙ্গাইল শাড়ি, জামদানি শাড়ি, মনিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্প পণ্য। থাকবে পাটজাত পণ্য, বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। এছাড়া থাকছে খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র, পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা প্রদান, অনলাইন সেমিনারসহ নানা আয়োজন।
২৮ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা দর্শনার্থীদের খোলা থাকবে ফেস্টিভ্যালের পেজ। https://www.facebook.com/heritagehandloombangladesh ঠিকানায় জানা যাবে মেলার সব তথ্য।