Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাতীয় প্রবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের পরিসংখ্যান মিথ্যা: ফখরুল


৩০ অক্টোবর ২০২০ ১৬:২৮

ফাইল ছবি

ঢাকা: জাতীয় প্রবৃদ্ধি নিয়ে সরকারের পরিসংখ্যান মিথ্যা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সেমিনারে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

‘কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের কৃষি সেক্টরে কৌশল নির্ধারণ’ শীর্ষক এই সেমিনার আয়োজন করে এগ্রিকালচারিস্ট‘স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব)। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ময়মনসিংহ বাংলাদেশে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভুঁইয়া।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে ভারত স্বীকার করে যে, আমার (ভারত) ১০% কমে গেছে প্রবৃদ্ধি । আর এরা (সরকার) বলেছে মিথ্যা কথা ৮-১০% বেড়ে গেছে। জাস্ট ইমাজিন। একটা সরকার কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে তারা জনগণের সঙ্গে মিথ্যা কথা বলে? কারণটা কী? জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই। এই সরকার সম্পূর্ণভাবে জনবিচ্ছিন্ন। সেই কারণেই জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব নেই।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা (সরকার) মিথ্যাচার করছে। প্রণোদনার ব্যাপারে আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম এটা শুভঙ্করের ফাঁকি। তারা বলছে যে প্রণোদনা দিচ্ছে। এটা দিচ্ছে ব্যাংক থেকে। প্রণোদনার ৮৭% ছিলো ব্যাংকঋণ। অর্থাৎ টাকা তারাই পাবে ব্যাংক যাদের ওপর খুশি হবে বা সন্তুষ্ট থাকবে। ফলে কী হয়েছে? যারা সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, যারা ব্যাংকের সঙ্গে বিভিন্ন লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় তারা কিন্তু এই প্রণোদনা পাচ্ছে না। ফলে আমাদের ইনফরমাল সেক্টর যেটা এটা নিঃশেষ হয়ে গেছে, পুঁজি হারিয়ে গেছে তারা প্রণোদনা পাচ্ছে না।’

‘গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা আরও ভয়াবহ। আরবান ইকনোমিতেও একই অবস্থা হয়েছে। এরা (সরকার) পুরো জিনিসটাকে ঢেকে রাখছে, মিথ্যা কথা বলছে। আমার কাছে মনে হয়- কনশাসলি তারা এদেশের অর্থনীতিকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য, পরনির্ভরশীল করে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা যে মূল রাজনৈতিক বিষয়ের জন্য লড়াই করেছিলাম, যুদ্ধ করেছিলাম সেই বিষয়টা অর্থাৎ গণতন্ত্রকে আমরা কোনোমতে আনতে পারছি না। এই গণতন্ত্র আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল, যেটার জন্য আমরা দীর্ঘকাল সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। যা আমরা অর্জন করেছিলাম ৯০ সালে। এই আওয়ামী লীগ সেই গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে সেই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’

‘বিএনপি নাই’— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেখেন, আমার কাছে ইন্টারেস্টিং লাগে। তারা বলেন যে, বিএনপি নেই, বিএনপি নাকি একেবারে শেষ হয়ে গেছে, নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক তো সারাদিন, প্রত্যেকদিন শুধুমাত্র বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলা। দ্যাট মিনস বিএনপি এতো বেশি করে আছে, এতো প্রবলভাবে আছে যে আপনাকে প্রত্যেকদিন বিএনপি নিয়েই কথা বলতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘এখনো তো দুর্নীতি দুর্নীতি দুর্নীতি। চতুর্দিকে দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু নেই। আমি তো আমার চতুর্দিকে দেখি যে সবাই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আমরা ভাই হয়ছে আক্রান্ত, আমার চাচা হয়েছে, খালা হয়েছে। খবর নিয়ে দেখবেন যে, খুব কম পরিবার আছে যাদের কেউ না কেউ আক্রান্ত হননি। একটা পরিবারে ঢুকলে তাদের সবার হয়ে যায়। এই যে ঢাকা উত্তরের মেয়র তার পরিবারের ১৯ জন এক সঙ্গে হাসপাতালে গেছে, একসঙ্গে বেরিয়ে আসছে। তারপরেও তারা বলবেন যে, এক হাজার, ১৯‘শ আক্রান্ত হচ্ছে। বেশির ভাগ জেলায় এখন কোনো টেস্ট হয় না। এখন নো টেস্ট নো করোনা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে জিডিপির ১৮.১৯% আর এগ্রিকালচারে ১. সামথিং। পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনে এতো টাকা কেনো? কারণটা হচ্ছে- একদলীয় শাসন ব্যবস্থা যদি রাখতে হয়, তাহলে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন বানাতে হবে। সবাইকে খুশি রাখতে হবে, সবাইকে একটার পর একটা প্রণোদনা দিতে হবে, গাড়ি দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিশেষ বাহিনীর লোজজনকে ৩০ লাখ করে টাকা দিয়েছে গাড়ি কেনার জন্য। এখন ডেপুটি সেক্রেটারি পর্যন্ত গাড়ি। চোখ বন্ধ করে কিনবে এবং পরে ৫০ হাজার টাকা করে মাসে পাবে গাড়ির মেইনটেইনেসসের জন্য। আর আমার কৃষক ভাই কী করবে? খাওয়া পাবে না। আমার যে ভ্যান চালায় সে খাওয়া পাবে না। এই যে বৈষ্যম সৃষ্টি করছে তারা সমাজের মধ্যে, অর্থনীতির মধ্যে। এর পরিণতি ভয়াবহ।’

এ্যাবের আহবায়ক রাশিদুল হাসান হারুনের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ইব্রাহিম খলিল, অধ্যাপক জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, অধ্যাপক মো. আব্দুল করিম, অধ্যাপক শামসুল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক শওকত আলী, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল ফারুকসহ অন্যরা।

করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ টপ নিউজ বিএনপি রাজনীতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর