কর্ণফুলীকে জাতীয় নদী ঘোষণা করুন: ওয়ার্কার্স পার্টি
১ নভেম্বর ২০২০ ২০:৫৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ খ্যাত কর্ণফুলীকে জাতীয় নদী ঘোষণার দাবি এসেছে চট্টগ্রামে ওয়ার্কার্স পার্টির এক নাগরিক সমাবেশ থেকে। একইসঙ্গে কর্ণফুলীর দখল ও দূষণ বন্ধ করা, ড্রেজিং কার্যকর করা, অবিলম্বে নদীটিকে পলিথিন ও বর্জ্য মুক্ত করার দাবিও জানানো হয়েছে।
রোববার (১ নভেম্বর) বিকেলে ‘নদী বাঁচাও, দেশ বাঁচাও’ এবং ‘বিপন্ন কর্ণফুলী, বাঁচাও দেশের অর্থনীতি’ এই স্লোগান নিয়ে নগরীর চেরাগি চত্বরে মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে ওয়ার্কার্স পার্টি, চট্টগ্রাম জেলা। কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি আবু হানিফ।
সমাবেশে নদী গবেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বাংলাদেশের কোনো জাতীয় নদী নেই। এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। কর্ণফুলী বাংলাদেশের অর্থকরী নদী। জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদান বিশাল। চট্টগ্রাম বন্দর এই নদীর তীরে। জাতীয় অর্থনীতির আয়ের একক অন্যতম প্রধান উৎস এই বন্দর। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যেও ৯৮ ভাগ এই কর্ণফুলী নদী তীরের বন্দরের মাধ্যমে হয়। বিশ্বে এই বন্দরের অবস্থান ৫৮তম। বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর জীবন, সংস্কৃতি, সামাজিকতা, অর্থনীতি, পরিবেশ-প্রতিবেশ সব এই নদীর সাথে সম্পৃক্ত। এই নদী অববাহিকার ঐতিহ্য হাজার বছরের। কর্ণফুলী বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে।’
তিনি বলেন, ‘এই নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল তৈরি হচ্ছে। সংযুক্ত পাঁচটি নদীতে কর্ণফুলী নদীর পানি প্রবাহিত হয়। নানা ভাবে এই নদী এই ভূখণ্ডের জাতিসত্তার অহঙ্কার বহন করে। দেশের আর কোনো নদী এত ইতিহাস সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যের ধারক নয়।’
সভাপতির বক্তব্যে আবু হানিফ বলেন, ‘দখল আর দূষণে কর্ণফুলী নদীর প্রাণ আজ ওষ্ঠাগত। কর্ণফুলীর টানেল হলে ওপারে গড়ে উঠবে আরেকটি নগরী। আন্তর্জাতিক কানেকটিভিটিতে এই টানেল বিশাল ভূমিকা রাখবে। বন্দর ঘিরেই আমাদের আমদানি-রফতানির সব কার্যক্রম। পাশাপাশি শিল্পায়নও নির্ভরশীল। তাই কর্ণফুলীকে ভালোভাবে রাখতে হবে। কর্ণফুলী না বাঁচলে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে পড়বে।’
ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান বলেন, ‘কর্ণফুলীকে গতিশীল রাখতে ড্রেজিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বহু বছর আগে। সেই ড্রেজিং আজও কার্যকরভাবে করা সম্ভব হলো না। পলিথিন জমে নদীর গভীরতা কমে গেছে। কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু ঘিরে জমছে পলি। নদীর দুই তীরে শত শত শিল্প কারখানা। নানা ভাবে নদীর পরিসর ছোট হয়ে আসছে। দখল করা নদীর জমি উদ্ধারে উচ্চ আদালত নির্দেশনা দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্ব রাখা একটি নদীকে এভাবে অবহেলা করা যায় না। কর্ণফুলীকে জাতীয় নদী ঘোষণা করা হলে হয়তো এসব অবহেলার অবসান হবে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সদস্য সুপায়ন বড়ুয়া, যুব মৈত্রী চট্টগ্রাম জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মিয়া, ছাত্র মৈত্রী জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সাইফুদ্দিন সুজন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির সদস্য মোকতার আহমেদ, শামসুল আলম, অধ্যাপক শিবু দাশ, যুবনেতা মো. মহসীন, আবুল মনসুর ও পারভেজ রায়হান।
ওয়ার্কার্স পার্টি কর্ণফুলী কর্ণফুলীর দখল ড্রেজিং কার্যকর দূষণ