রাজস্ব আহরণে কুমিল্লা ভ্যাটের সাফল্য, পুরস্কৃত ৫৫ কর্মকর্তা
১ নভেম্বর ২০২০ ২১:১৭
ঢাকা: করোনাকালে যেখানে রাজস্ব আহরণের গতি খেই হারিয়ে ফেলছে ঠিক তখনই যেন রাজস্ব আহরণে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলো কুমিল্লা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ে গত বছরের চেয়ে ৭৩ শতাংশ ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।
কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, করোনাকালে বৈশ্বিক অর্থনীতি যখন নাজুক অবস্থায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জের পথে তখন ব্যতিক্রমী প্রবৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছে কুমিল্লা কমিশনারেট। ব্যতিক্রমী অগ্রগতির পেছনের পরিশ্রমি কর্মীদের পুরস্কৃত করার জন্য গত ২৭ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কুমিল্লা কমিশনারেট। অনুষ্ঠানে মোট ৫৫ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। ২৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাদের বিশেষ অবদানের জন্য সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সেরা বিভাগীয় কর্মকর্তার স্বীকৃতি অর্জন করেন নোয়াখালী বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. ফখর উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘করোনাকালে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে রাজস্ব সৈনিকদের কাজ করতে হবে। এ পুরস্কার আমাদের দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দিয়েছে।’ তিনি সিগারেট/বিড়ি আটক ও অনলাইন রিটার্ন পেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এ স্বীকৃতি পান।
সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তিতে অবদানের জন্য সেরা রাজস্ব কর্মকর্তা হন বেলাল উদ্দিন ফাইজুল। তিনি বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব বেশী আদায়ে ভূমিকা রাখতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।’
সেরা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হন নন্দিতা ভৌমিক। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েও অনলাইন রিটার্ন পেশে নিজ বিভাগসহ অন্য বিভাগকে সহায়তা ও পরামর্শ সেবা দিয়ে ব্যতিক্রমী ভূমিকা রাখেন। নন্দিতা ভৌমিক বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় মধ্য দিয়ে কাজ করার আনন্দই আলাদা। সাফল্যে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়।’
এদিকে এক নজরে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাটের সাফল্যের চিত্র হচ্ছে, রাজস্বের প্রবৃদ্ধি সেপ্টেম্বরে ১৫৩ শতাংশ আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৩ শতাংশ। অনলাইনে রিটার্ন পেশ ৯৩.৭১ শতাংশ। ইটভাটার বকেয়া আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৬৪৩ শতাংশ। স্থান ও স্থাপনা খাতে প্রবৃদ্ধি ২১ শতাংশ। সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তি ৪০টি। ভ্যাট মামলা ৩৯টি। শুল্ক ফাঁকি মামলা ১৬টি। জরিপকৃত প্রতিষ্ঠান ৩৯৪৪টি। রিটার্ন যাচাই করে ফাঁকি উদঘাটন ৫১টি আর অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ৯৫৭টি।
এছাড়া, কর্মচারীদের মধ্যে মো. মনির হোসেন, গাড়িচালক মো. জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, অফিস সুপারিনটেনডেন্ট মো. ছালাহউদ্দিন তালুকদার পুরস্কৃত হন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন- সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খ ম রিশাদুল আলম নূর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, বিপ্লব চন্দ্র দাস, রাজীব রায়, রিজুয়ান রশিদ রিপন, মো. সরোয়ার হোসেন, মাসুদ রানা, মো. আবু সায়েদ, সুমন চন্দ্র দে, মো. মাহমুদুল হাসান মুন্সী, মো. জসিম উদ্দিন, মো. হারনুর-অর-রশিদ, মো. সুবা মিয়া তালুকদার ও প্রণব তঞ্চঙ্গ্যঁ; রাজস্ব কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, মো. আমিনুল হক, মো. তৌহিদুল ইসলাম, তপন কুমার দাশ ও মো. আমীর হোসেন।
কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, ‘কুমিল্লা কমিশনারেট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত সূচকসমূহের বেশিরভাগ সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। রাজস্ব আদায়ে প্রথম স্থান অর্জনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। পুরস্কারের ধারা অব্যাহত থাকলে সকলের কাজের মান বাড়ে।’