Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আশ্বাসে পার ৪৫ বছর, সেতুর অভাবে ভোগান্তি লাখো মানুষের


৩ নভেম্বর ২০২০ ০৮:২৩

মানিকগঞ্জ: পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের রাস্তায় মাত্র তিনটি সেতু নির্মাণ হলেই লাখো মানুষের ভোগান্তি দূর হয়ে যায়। কিন্ত মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী-বাঠুইমুড়ি বেড়িবাঁধের বেহাল দশা স্বাধীনতা পরবর্তী গত ৪৫ বছর ধরেই। বর্ষা-বন্যায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসেই কেটে গেছে যুগের পর যুগ। তবে এবার আশ্বাস নয়, এই অর্থবছরেই তিনটি সেতু নির্মাণ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

সরজমিনে বানিয়াজুরী-বাঠুইমুড়ি বেড়িবাঁধ ঘুরে দেখা যায় মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। ৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের এই দীর্ঘপথে নেই কোনো পাকা সেতু। বেড়িবাঁধের তাড়াইল, নয়াচর ও বানিয়াজুরী অংশে তিনটি জায়গায় পানি প্রবাহের জন্য পথ রাখা হলেও দীর্ঘ ৪৫ বছরেও সেখানে সেতু নির্মাণ করা হয়নি। ফলে বছরের প্রায় ৬ মাস ওই তিনটি স্থান পানিতে ডুবে থাকে।

বর্ষায় বাঁশের সেতু, না হয় নৌকায় খেয়া পারাপার হয়ে মানুষজন যে যার গন্তব্যে পৌঁছান। অথচ বেড়িবাঁধের এই ৫ কিলোমিটার পথে তিনটি সেতু নির্মাণ করা হলে জেলার হরিরামপুর, ঘিওর, শিবালয়, দৌলতপুর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সাথে যোগাযোগ সহজ হতো।

তাড়াইল অংশের বাঁধের ওপরে প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে ছোট্ট একটি ঘর তুলে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ রাজু খান চায়ের দোকান করছেন। তিনি বলেন, ‘একসময় জেলার ঐহিত্যবাহী ঝিটকা হাটে যাতায়াতের অন্যতম রাস্তা ছিল বানিয়াজুরী-বাঠুইমুড়ি বেড়িবাঁধটি। বিশেষ করে ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয় এমনকি অন্যসব জেলার হাজার মানুষজন এই বেড়িবাঁধ ব্যবহার করে ঝিটকা হাটে বিকিকিনির জন্য আসা-যাওয়া করতো। কিন্ত বাঁধের যোগাযোগ ব্যবস্থা এতোই নাজুক হয়ে পড়েছে যে সামান্য বৃষ্টি হলেই অচল হয়ে পড়ে মানুষের যাতায়াত। এখানে তিনটি ব্রিজ নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।’

তাড়াইল গ্রামের খন্দকার মোফাজ্জল আলী বলেন, ‘তিনটি ব্রিজের অভাবে বছরের পর বছর আমরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। বৃষ্টিতে বাঁধের ওপর দিয়ে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। বর্ষায় ভোগান্তির মাত্র বেড়ে যায় কয়েকগুণ। শুনেছি তিনটি ব্রিজ নির্মাণে সয়েল টেস্ট করা হয়েছে। কিন্ত কবে নাগাদ আলোর মুখ দেখবো তা আল্লাহই জানেন।’

বিজ্ঞাপন

বেড়িবাঁধের তাড়াইল ও নয়াচর অংশের ভাঙা জায়গায় মানুষের যাতায়াতের জন্য দু’টি বাঁশের সেতু করেছেন ঠাকুর দাসী পাটনী ও তার জামাই উজ্জল। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বর্ষায় প্রায় ৬ মাস চুক্তিতে ইজারা নিয়ে সেখানে দু’টি বাঁশের সেতু নির্মাণ করেছেন তিনি। ঠাকুরদাসী জানান, একটি বাঁশের সেতু তৈরি করতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। সেতু পাড়ি দিতে মানুষ প্রতি ৫ টাকা নেওয়া হয়। এছাড়া মোটরসাইকেল, রিকসা, ভ্যানের সাথে মানুষ পার হতে ১০ টাকা নেই। মানুষের চাপে মাঝে মধ্যে সেতুটি ভেঙে যায় এবং পরে তা মেরামত করা হয়। প্রায় ৬ মাস পানি থাকে তিনটি ভাঙা স্থানে।

ঘিওর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাকুর রহমান বলেন, ‘বানিয়াজুরী-বাঠুইমুড়ি বেড়িবাঁধে তিনটি সেতুর অনুমোদন আমরা পেয়েছি। সয়েল টেস্ট করার পর ডিজাইন ও সেতু নির্মাণের বাজেট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি চলতি মাসেই টেন্ডার হবে। করোনা ও বন্যার কারণে কাজে কিছুটা ব্যহত হয়েছে।’ তবে এই অর্থ বছরেই সেতু তিনটির কাজ হয়ে যাবে বলেও আশা জানান তিনি।

তিনটি সেতু দুর্ভোগের সীমা বানিয়াজুরী-বাঠুইমুড়ি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে সরিয়ে শীর্ষে লিভারপুল
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২০

পদ্মায় কমেছে পানি, থামছে না ভাঙন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯

সম্পর্কিত খবর