‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি বিএনপির
৩ নভেম্বর ২০২০ ১৫:২২
ঢাকা: বরাবরের মতো এবারও ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— ৭ নভেম্বর সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১ টায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পুস্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া, করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত আকারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুপুর ১২ টায় বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ১২টা ১৫ মিনিটে বিএনপি-ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ১২টা ৩০ মিনিটে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়ার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবে।
এদিন বিকেল তিনটায় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। অনুরূপভাবে দেশব্যাপী জেলা, মহানগর ও উপজেলা বিএনপি’র উদ্যোগে নিজ নিজ সুবিধানুযায়ী আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে।
মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি বলেন, ‘দেশবাসী চরম এক দুঃসময়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন করতে যাচ্ছে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকারের পথ সংকুচিত করে চলছে স্বাধীনতা পরবর্তীকালের মতো ভয়াবহ দুঃশাসন। জনগণের কাছ থেকে দেশের মালিকানা কেড়ে নিয়ে নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে মাস্তানতন্ত্র কায়েম করা হয়েছে। যেখানে কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা এবং সম্মান নেই। ক্ষমতাসীনদের লাগামহীন ব্যর্থতা, দুর্নীতি, লুটপাট, দখল, সন্ত্রাস, অনিয়ম ও অনাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বা সত্য কথা লিখলেই রাষ্ট্রীয় ও দলীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হত্যা, গুম, অপহরণ, নির্যাতন, মামলা, গ্রেফতারসহ ভয়ভীতি প্রদর্শন চলছে।’
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, “সম্প্রতি জাতিসংঘ ঘোষিত ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তি অবসান দিবস’ পালিত হবার পরের দিন অপহৃত চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারকে সীতাকুন্ডের একটি ব্রিজের নিচ থেকে গুরুতর আহত ও মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের সময় ধারণকৃত গোলাম সারোয়ারের যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বারবার বলছিলেন ‘আমাকে মাইরেন না, আমি আর নিউজ করব না’। সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারকে অপহরণ করা হয়েছিল পেশাগত কারণেই। অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা তাকে নির্যাতনের সময় আর নিউজ না করার অঙ্গীকার আদায়ে বারবার চাপ দিয়েছিল। তার এই আকুতি, সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন এবং স্বাধীন ও সাহসী সাংবাদিকতার কন্ঠরোধে ভয়াবহ মধ্যযুগীয় বর্বরতার বাস্তব প্রমাণ।’
সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারের আর্তনাদে গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গোলাম সারোয়াকে অপহরণ করা হয়েছিল ক্ষমতাসীন প্রভাবশালীদের জমি দখল, অনিয়ম, দুর্নীতি, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সত্য সংবাদ প্রকাশের জন্য। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর ক্ষমতাসীনদের দমন-পীড়নেরই ধারাবাহিকতা।’
প্রিন্স বলেন, ‘সম্প্রতি পটুয়াখালীর বাউফলে পছন্দ মতো কাজ না করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা উপজেলা কৃষি অধিদফতরের এক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন। প্রতিনিয়তই দেশে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ও পেশী শক্তির ঘটনা ঘটছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারের ওপর নির্যাতনসহ সরকারি কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা, ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাই। গোলাম সারোয়ারকে অপহরণ ও নির্যাতনকারী প্রকৃত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’