Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইস্পাহানির ৪ প্রতিষ্ঠানের দেড় কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকি, মামলা


৪ নভেম্বর ২০২০ ১০:১৫

ঢাকা: চট্টগ্রামের ইস্পাহানি গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দেড় কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। আর এই ভ্যাট ফাঁকির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইস্পাহানি গ্রুপের ওই চার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- দ্য এভিনিউ হোটেল অ্যান্ড স্যুটস, পিটস্টপ সুইটস অ্যান্ড বেকারি, পিটস্টপ শো-রুম এবং পিটস্টপ সুপার স্টোর। ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এই চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটন করা হয়। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো সুদসহ প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আর এ অভিযোগে ওই চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইতো মধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে। এ বিষয়ে ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই চার প্রতিষ্ঠানে অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন। প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। ফলে ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ইতো মধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা ন্যায় নির্ণয়নের জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হবে।’

এদিকে ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, দ্য এভিনিউ হোটেল অ্যান্ড স্যুটস ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ১৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৩ হাজার ৮১৪ টাকা। এক্ষেত্রে ৪২ লাখ ২১ হাজার ৬৬৮ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৯ টাকা সুদ প্রযোজ্য।

এছাড়া পিটস্টপ সুইটস অ্যান্ড বেকারি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১২ কোটি ৫৪ লাখ৬৯ হাজার ৯৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১২ কোটি ৯৭ লাখ ২৩ হাজার ৩০৭ টাকা। এক্ষেত্রে ৪২লাখ ৫৩ হাজার ৩৬১ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৭ লাখ ২১ হাজার ১২৬ টাকা।

অন্যদিকে পিটস্টপ শো-রুম ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ৬ কোটি ৭ লাখ ৬ হাজার ২৫৯ টাকা। তবে জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৪ হাজার ৫১৫ টাকা। এতে দেখা যায়, ১০ কোটি ৩৮ লাখ ১৮ হাজার ২৫৬ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার ৪২১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে ৪১ লাখ ৭১ হাজার ৯১৪ টাকা সুদ আদায়যোগ্য।

অপরদিকে পিটস্টপ সুপার স্টোর ২০১৮ সালের জানুয়ারি হতে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করেছে ১ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৫ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ৮ কোটি ৮৫ লাখ ৭৪ হাজার২৩৮। এক্ষেত্রে ৭ কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৩ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ১০১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। যথাসময়ে এই ভ্যাট পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৬ লাখ ১৪ হাজার ৭৯ টাকা আদায়যোগ্য।

অনুসন্ধানে ইস্পাহানি গ্রুপের চার প্রতিষ্ঠান সর্বমোট ৮৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭৭৬ ভ্যাট পরিহার করেছে এবং এই পরিহারকৃত ভ্যাট এর উপর সুদ বাবদ ৬০ লাখ ৬ হাজার ৬৮৮ টাকা প্রযোজ্য হবে; যা আদায়যোগ্য।

ইস্পাহানি দেড় কোটি ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর ভ্যাট ফাঁকি মামলা দায়ের


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর