‘পোশাকে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি, রফতানিতে এগিয়ে পাট ও পাটজাত পণ্য’
৪ নভেম্বর ২০২০ ১৪:৫৮
ঢাকা: করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে দেশের রফতানি আয়ের চাকা ঘুরে দাঁড়ানোর পথে ছিল। কিন্তু অক্টোবরে সেই রফতানি আয়ে হোঁচট খেয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া অক্টোবরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সেইসঙ্গে মাসটিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আয়ও হয়েছে কম। এছাড়া অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই- অক্টোবর) পোশাক খাতে নেতিবচাক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর করোনাভাইরাসের মহামারিতেও দেশের রফতানি আয়ের পালে হাওয়া দিচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
ইপিবির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অক্টোবরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। তবে মাসটিতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩১৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গেল বছরের একই মাসে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৩২ লাখ ডলার। গেল অক্টোবরের এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কম। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসের (জুলাই-অক্টোবর) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ২৭৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ১ হাজার ২৮৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ প্রথম চার মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে দশমিক ৩৮ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রফতানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের বছর একই সময় রফতানি হয়েছিল ১ হাজার ২৭২ কোটি ডলার।
এদিকে করোনার প্রভাবে গত মার্চ থেকে পোশাক খাতের রফতানি কমতে শুরু করে। এপ্রিলে নামে ভয়াবহ ধস এবং মে মাসেও তা অব্যাহত ছিল। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে পোশাক খাত। এর ধারাবাহিকতা জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও অব্যাহত ছিল। তবে অক্টোবরে শেষে এ খাতের আয়ে হোঁচট খেয়েছে। ইপিবির তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলোদেশ আয় করেছে এক হাজার ৪৫ কোটি ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে আয় ছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার।
এছাড়া করোনা মহামারির মধ্যে দেশের রফতানি আয়ের পালে হাওয়া দিয়ে আসছে পাট ও পাটজাত পণ্য। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে খাতটিতে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৪০ শতাংশ। জুলাই-অক্টোবর চার মাসে ৪৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেশি।
ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কৃষিপণ্য রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার; এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলানায় ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে দশমকি ৩৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এ খাতে রফতানি আয় হয়েছিল ৩৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।
এছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি করে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৩২ লাখ ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে প্লাস্টিকজাত পণ্য রফতানির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১৩ শতাংশ।
ইতিবাচক নেতিবাচক পাট ও পাটজাত পণ্য পোশাক প্রবৃদ্ধি রফতানি আয় হোঁচট