সাংসদপুত্র-মন্ত্রীপুত্র কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি: হানিফ
৪ নভেম্বর ২০২০ ২৩:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দলীয় বিবেচনায় কোনো অন্যায়কারীকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, সাংসদপুত্র, মন্ত্রীপুত্র-কাউকেই ছাড় দেওয়া হয়নি।
বুধবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বর্ষীয়ান রাজনীতিক প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
সিলেট-নোয়াখালীর ঘটনায় মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে মন্তব্য করে হানিফ বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার কারণে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন— সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা, নোয়ালখালীর বেগমগঞ্জের একটি ঘটনা। সারাদেশের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে।’
এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে সরকারের সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ম্লান করে দেওয়ার চক্রান্ত আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়েছে যে সরকারের বিচারহীনতার কারণেই নাকি এসব হচ্ছে। তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনেকবার বলেছি— এমসি কলেজের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচারের মুখোমুখি আমরা করেছি। প্রায় সবাইকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।’
‘সরকারের দলীয় বিবেচনায় কখনো কোনো অন্যায়কারীকে ছাড় দেওয়ার নজির নেই। যার বিরুদ্ধে যখনই অভিযোগ উঠেছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সাধারণ কর্মীই হোক, সাংসদপুত্রই হোক বা মন্ত্রীর পুত্র হোক— কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। তারপরও আমাদের গায়ে কালিমা লেপন করার চেষ্টা হচ্ছে,’— বলেন হানিফ।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম আলো পত্রিকায় রিপোর্ট করেছে— একবছরে দেশে নাকি ছয়শ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সেসবে নাকি অভিযোগ উঠেছে দলীয় নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার। সেটা কয়টা? পাঁচটা-সাতটা বা দশটা? মিডিয়ায় দেখেছি স্কুলের হেডমাস্টার, শিক্ষক, মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের ঠাকুর এমনকি গির্জার ফাদার থেকে শুরু করে সমাজের সব শ্রেণিপেশার মানুষের বিরুদ্ধেও নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাহলে কেন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হবে? কেন বলা হবে সরকারি দলের ছত্রছায়ায়…? সরকার তো কাউকে প্রশ্রয় দেয়নি।’
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অন্য দেশের লোকজন বলছে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দেশের বিএনপির লোকজন তা চোখে দেখছে না। বরং উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে মিথ্যাচার করছে। এবং এই সুযোগটা কিন্তু আমাদের কিছু নেতাকর্মীদের কারণে পাচ্ছে।’
নেতাকর্মীদের সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের মিথ্যাচারের জবাব দিতে হবে। সেই সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংযম থাকতে হবে। তাদের কারণে যেন কোনো অভিযোগ না উঠে। যেন সরকারের কোনো অর্জনকে কেউ প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে।’
দলের চরম দুঃসময়ে সভানেত্রী শেখ হাসিনার পাশে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ছায়া হয়ে ছিলেন বলে মন্তব্য করেন হানিফ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর সন্তান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।