যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে খুনের মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
৫ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্ত্রীকে খুনের দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিত মো. সানু মিয়া (৩০) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম।
সানু মিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি তার স্ত্রী ইতি বেগমকে (২৪) হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ইতি বেগমের বোন খুরশিদা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, ২০১৪ সালে বিয়ের পর থেকে সানু তার স্ত্রী ইতিকে যৌতুকের জন্য মারধর করে আসছিলেন। হত্যাকাণ্ডের দুই মাস আগে ইতিকে নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে চলে আসেন সানু। নগরীর সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়িতে জমির উদ্দিন লেইনে ক্রাউন কোম্পানির ভবনে তারা ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন।
ঘটনার আগের রাতে সানু তার স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য আবারও মারধর করেন। তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরদিন দুপুর দুপুরে সানু কর্মস্থল থেকে ফিরে রান্না করতে দেরি হওয়ার অভিযোগ এনে ইতিকে আবারও মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে বাসার সিলিংয়ের লোহার অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে সেটা নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এলাকার লোকজন বিষয়টি দেখে সানু মিয়াকে পালানোর সময় ধরে ফেলে এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম সারাবাংলাকে জানান, এই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় একমাত্র আসামি সানু মিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। একই বছরের ৬ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১১ (ক) ধারায় সানু মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে তার উপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।