নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইলিশ ধরায় শাস্তি পেয়েছে সাড়ে ৫ হাজার জেলে
৭ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫৩
ঢাকা: প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরার নিষিদ্ধকালীন সময়ে আইন অমান্য করার দায়ে ৬ হাজার ৯০৪টি মামলায় ৫ হাজার ৫৩৩ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৯০ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর অবৈধভাবে আহরিত ৪৫.৪১ মেট্টিক টন ইলিশ মাছ আটক করা হয়েছে। এছাড়া নৌকা ও জাল নিলামে সরকারের আয় হয়েছে ১৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
শনিবার (৭ নভেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংরক্ষণ অভিযান সফল করতে এই সময়ে দেশের ৮ বিভাগে ২ হাজার ৬৪০টি মোবাইল কোর্ট ও ১৯ হাজার ৮১৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের দিক-নির্দেশনায় ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদের তত্ত্বাবধানে কর্মসূচি বাস্তবায়নে মৎস্য অধিদফতরের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের সাথে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছেন ইলিশ সম্পৃক্ত ৩৬ জেলার জেলা প্রশাসক, ১৫২ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশ, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, র্যাব, বিজিবিসহ স্বেচ্ছাসেবী নানা সংগঠন ও ব্যক্তিরা।
অভিযানের প্রথম দিন গত ১৪ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষায় জেলে ও মৎস্যজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের উৎসাহিত করতে নৌপথে অভিযানে অংশ নিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মন্ত্রীর সাথে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদসহ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অভিযানে অংশ নেন। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ নিয়মিত বিভিন্ন জেলায় মাঠ পর্যায়ের অভিযানে অংশ নিয়েছেন।
অভিযান সফল করতে মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদফতর গঠিত একাধিক তদারকি টিম মাঠে কাজ করেছে। এবছর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মা ইলিশ রক্ষায় আকাশপথে হেলিকপ্টার দিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। তাছাড়া নৌপুলিশ, পুলিশ, বিমান বাহিনী নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ড এর সমন্বয়ে একাধিক যৌথ সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২০ বাস্তবায়ন উপলক্ষে মৎস্য অধিদফতরে স্থাপিত কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের প্রতিবেদন অনুযায়ী এবছর অভিযান বাস্তবায়নের ২২ দিন দেশের ৮ বিভাগে ২ হাজার ৬৪০টি মোবাইল কোর্ট ও ১৯ হাজার ৮১৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ২৪৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ১২ কোটি ৯১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কারেন্ট জালসহ ২ হাজার ৬৮৫ টি অন্যান্য অবৈধ জাল আটক করা হয়েছে।
এসময়ে অবৈধভাবে মৎস্য আহরণের কারণে মৎস্য আইনের আওতায় ৫ হাজার ৫৩৩ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং ৯০ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে ৬ হাজার ৯০৪ টি। এসময়ে অবৈধভাবে আহরিত ৪৫.৪১ মেট্টিক টন ইলিশ মাছ আটক করা হয়েছে। নৌকা ও জাল নিলামে সরকারের আয় হয়েছে ১৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর হতে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ২২ দিন দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছিলো সরকার। এই ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময় ছিলো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
ইলিশ মাছ জরিমানা নৌকা ও জাল প্রজনন মৌসুম বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি