Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কমিটি ও মনোনয়ন-রিকমেন্ডেশনে অর্থ লেনদেন সহ্য করা যায় না’


৭ নভেম্বর ২০২০ ১৮:১৬

ফাইল ছবি

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের কমিটির সময় মনোয়নের ব্যাপারে রিকমেন্ডেশন দিতে গিয়ে টাকা-পয়সার লেনদেন হয়। আওয়ামী লীগের মতো আদর্শগত দলে এটা কোনোভাবে সহ্য করা যায় না।

শনিবার (৭ নভেম্বর) তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক কাযক্রম শুরু হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটি শক্তিশালী এবং গণমুখী সাংগঠনের জন্য সাংগঠনিক ঐক্যের বিকল্প নেই। সংগঠনের মজবুত জনভিত্তি তৈরি করতে হলে থাকতে হবে ঐক্যবদ্ধ। ছোটখাট বিষয়ে মতের অমিল থাকলে তা মিটিয়ে ফেলা উচিত। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশ হচ্ছে, সংগঠনের সকল পর্যায়ে অনতিবিলম্বে অন্তঃকলহ-অনৈক্য দূর করতে হবে। দলকে করতে হবে শক্তিশালী। জেলা থেকে শুরু করে উপজেলা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তোলাই হবে জেলা আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য।’

তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। ডেডিকেটেড কর্মীদের তুলে আনতে হবে তৃণমূল থেকে। অবস্থান ভারী করার জন্য যারা নিজস্ব বলয় তৈরি করতে নিজের লোক দিয়ে কমিটি গঠন করতে চায়, তারা দলের স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। দলকে শক্তিশালী করতে হলে নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের এগিয়ে রাখতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মনে রাখবেন মাদকব্যবসয়ী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি, চিহ্নিত অপরাধী, চিহ্নিত চাঁদাবাজ, ভূমি দখলকারী, নারী অবমাননাকারী এবং নারী ধর্ষণকারী ব্যক্তিদের বিষয়ে আমাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। ধর্ষকের মতো নরপশুদের যেন আওয়ামী লীগে ঠাঁই না হয় সেই লক্ষ্যে তাদের জন্য দলের দরজা চিরতরে বন্ধ করে দিতে হবে। একটি রাজনৈতিক দলের প্রাণ হচ্ছে কর্মীবাহিনী। তৃণমূলের শক্তি দলকে টিকিয়ে রাখে। ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।’ নিজের লোক দিয়ে পকেট কমিটি করলে তা দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ত্যাগীদের জন্য রাজনীতিক পদ মসৃণ করতে হবে। দলকে এগিয়ে নিতে হলে সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাইলে ত্যাগী এবং নিবেদিত প্রাণদের মূল্যায়ন করুন। তাদের দূরে সরিয়ে রাখবেন না। দেশ যখন উন্নয়নের দিকে তখন একটি অশুভ চক্র নানা ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। আজকে সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া এটা তাদের সহ্য হয় না। মানবিতাবিরোধী একটি শক্তি অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খোঁজে। এখনও সে ষড়যন্ত্র চলছে। দেশে-বিদেশে চলমান তাদের নানান বৈঠক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কল্পকাহিনী ও গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’ দেশকে অস্থিতিশীল করে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার অপরাধীদের প্রশ্রয় দেন না। দলীয় পরিচয়ও তার কাছে কোনো অপরাধীর রক্ষাকবচ হতে পারেনি। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ যেন কোনো অপকর্ম করতে না পারে সেদিকে সতর্ক নজর রাখতে হবে আমাদের। দলের কমিটি করতে গিয়ে, মনোয়নের ব্যাপারে রিকোমেন্ডেশন দিতে গিয়ে টাকা-পয়সার লেনদেন হয়। আওয়ামী লীগের মতো আদর্শগত দলে এটা কোনোভাবে সহ্য করা যায় না।’ এ ব্যাপারে দলীয় নেত্রীর কঠোর অবস্থানের কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ ও সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে অগ্রযাত্রা তা এগিয়ে নিতে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। মতবিরোধ ভুলে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করি। সরকারের মধ্যে দলকে যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। দলের সত্ত্বা বজায় রাখতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শেকড় এদেশের মাটির অনেক গভীরে। দেশের জনগণই আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের শেকড়। জনগণ আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার কারণে বিএনপি এখন অস্তিত্ব সংকটে। জনগণ মনে করে, বিএনপির রাজনীতি এখন লাইফসাপোর্টে আছে, আওয়ামী লীগের নয়।’

৭ নভেম্বরের সরাসরি বেনিফিশারি জেনারেল জিয়া

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৭ নভেম্বরের সরাসরি বেনিফিশারি কে? জেনারেল জিয়া। বিপ্লব ও সংহতির মোড়কে সেদিন ষড়যন্ত্র করে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ঘাতকরা দেশকে অভিভাবক শূন্য করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের মহান অর্জন ও চেতনাকে ভূলণ্ঠিত করতে চেয়েছে। তারা চেয়েছে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। যার সবটুকু এখনও প্রকাশিত হয়নি। বেশিরভাগ ইতিহাসই আড়ালে রয়ে গেছে। ইতিহাসের এসব অজানা তথ্য তদন্তের মাধ্যমে বের করে আনা এখন সময়ের দাবি।’

মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি। আর মানিকগঞ্জ জেলার বর্ধিত সভা প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সংসদ সদস্য নাইমুর রহমান দুর্জয়, মমতাজ বেগম এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামসহ জেলা নেতারা।

অর্থ লেনদেন ওবায়দুল কাদের টপ নিউজ মনোনয়ন-রিকমেন্ডেশন সহ্য করা যায় না

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বিপদসীমার ওপরে পানি, ৪৪ জলকপাট খোলা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৬

তৃতীয় দিনের খেলাও পরিত্যক্ত
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৪

সিটিকে সরিয়ে শীর্ষে লিভারপুল
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২০

পদ্মায় কমেছে পানি, থামছে না ভাঙন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:১৯

সম্পর্কিত খবর