জমি রেজিস্ট্রেশনের ৮ দিনের মধ্যেই নামজারি
৯ নভেম্বর ২০২০ ১৬:১০
ঢাকা: নামজারি নিয়ে ঝামেলা কমাতে জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে জমি রেজিস্ট্রেশনের আটদিনের মধ্যে স্বয়ংস্ক্রিয়ভাবে নামজারি হয়ে যাবে।
সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সীমিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।
এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যরা সচিবালয় থেকে ভার্চুয়াল এ সভায় যোগ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে দেশের মানুষ, সর্বসাধারণ, ইনভেস্টর সবার জন্য নতুন একটি অধ্যায় সৃষ্টি হলো। এর ফলে মামলা মোকাদ্দমাও কমে আসবে। চলতি বছরের প্রথমদিকেই কীভাবে জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি এগুলোকে আরও কমফোর্ট করা যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। মানুষের যেন হয়রানি না হয়, সময় যেন না লাগে। এখনকার সিস্টেমটি হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন উপজেলা সার্কেল ভূমি অফিস থেকে সম্পন্ন হতো। দুইটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার ফলে সব সময় কমিউনিকেশন করা ডিফিকাল্ট ছিল। এ কারণে দীর্ঘসসূত্রিতা ছিলে এবং রেজিস্ট্রেশনেও অস্পষ্টতা ছিল, যে কোন জমি যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারত।’
তিনি জানান, এখন থেকে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও এসিল্যান্ড অফিসের মধ্যে একটা ইন্টারনাল সফটওয়্যার থাকবে। বাংলাদেশের সব এসিল্যান্ড অফিসে ৪ কোটি ৩০ লাখ রেকর্ড অনলাইনে চলে এসেছে। এখন থেকে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও এসিল্যান্ড অফিস একজন অপরজনের সার্ভারে ঢুকতে পারবে। যখন কারও কাছে জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবে, তখন সাব রেজিস্টার সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্ট্রি করে দেবে না, তিনি অনলাইনে এসিল্যান্ডের অফিস থেকে রেকর্ড অব রাইটস স্ট্যাটাস্টিকসটা জানবেন।
‘এতদিন দুইটি দলিল করতে হতো। এখন থেকে তিনটি দলিল করতে হবে। বাড়তি একটা এসিল্যান্ড অফিসও পাবে। যেহেতু এসিল্যান্ড দলিল অনলাইনে পেয়ে যাচ্ছে এবং তার কাছ থেকেই জমির ভেরিফিকেশন করে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সুতরায় এসিল্যান্ডের আর বাড়তি কিছুই লাগবে না। তিনি অটোমেটিকালি সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেই মিউটেশন (নামজারি) কমপ্লিট করবে। এ ক্ষেত্রে কাউকে ডাকতে হবে না। এটা ম্যাক্সিমাম আটদিন সময় দেওয়া হয়েছে, তবে ৮দিনও সময় লাগবে না। এই আটদিনের মধ্যে অটোমেটিকালি নামজারি হয়ে যাবে। ১৭টি উপজেলায় এরইমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকে জমি রেজিস্ট্রেশন করেন, মিউটেশন করেন কিন্তু রেকর্ড করেন না। এখন থেকে রেকর্ডটাও করতে হবে। এসিল্যান্ডের দায়িত্ব থাকবে মাসিক রিপোর্ট দেবেন কতটা মিউটেশন হলো এবং কতটা রেকর্ড হলো। নইলে খাজনা দিতে গেলে সমস্যা হয় এবং অনন্যা অনেক সমস্যা হয়। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যেন জমির সমান ভাগ পায় সেটি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা দেখবো তারা যেন বাবা মায়ের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিতে বারবার গুরুত্ব দিয়েছেন। কেউ তৃতীয় লিঙ্গের হলে তিনি কিভাবে জমির ভাগ পাবেন সেটি মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারে বলা আছে। কিন্তু অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে সেটি বলা নেই, সে বিষয়েই প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন যাতে কেউ বঞ্চিত না হন।’
তিনি জানান, এ ছাড়াও আজকের বৈঠকে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট: বাংলাদেশে অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০২০ সম্পর্কে অবহিতকরণ, বাংলাদেশ গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-এর আঞ্চলিক অফিস স্থাপন সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।