‘বীজ আলু’র দামও নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি কৃষকদের
১০ নভেম্বর ২০২০ ০৮:১৩
মুন্সীগঞ্জ: চলছে আলু আবাদের মৌসুম। সাধারণত নভেম্বরের ১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত জমিতে আলু আবাদের উপযুক্ত সময়। তবে বীজ আলু কেনা নিয়ে এবার দাম নিয়ে বিপত্তিতে পড়ার আশঙ্কা কৃষকদের। তাই খাবার আলুর দাম যেভাবে সরকার নির্ধারণ করছে, তেমনি বীজ আলুর দাম নির্ধারণ করা দাবি উঠেছে কৃষকদের মাঝে।
কৃষকরা জানান, আবাদের জন্য এরমধ্যেই বীজ আলু সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন তারা। তবে বাজারে খাবার আলুর দাম বাড়তি থাকায় এবার বেশি দামে বীজ কিনতে হবে বলে বাজারে গুঞ্জন উঠেছে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে বলে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এবছর মুন্সীগঞ্জের ৬টি উপজেলায় ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১ হাজার হেক্টর বেশি। তবে এবার বন্যার পানি নামতে দেরি হওয়ায় নিয়মিত পর্যায়ের আলু চায় এখনও শুরু করতে পারছেন না কৃষকরা। তবে অতিদ্রুতই পুরোদমে আলু রোপণ শুরু হবে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিগগিরই বেসরকারি পর্যায়ে জাত অনুযায়ী বীজ আলুর দাম নির্ধারণ করা করে দিলে খাবার আলুর মত বীজ আলুতেও দামের নৈরাজ্য ঠেকানো যাবে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চিতলিয়া এলাকার কৃষক রিপন মাহমুদ বলেন, ‘প্রতিবছর আলু আবাদ করি। একই আলুর বীজ কম-বেশি দামে কিনতে হয়। বিএডিসিও আলু বেশি দামে বিক্রি করে। এতে শতাংশ প্রতি আলুর খরচ বেশি পরে। তাই দাম নির্ধারণ করে দিলে কৃষকরা উপকৃত হবে।’ একই কথা জানান আরেক কৃষক আবু তালেব।
মুন্সীগঞ্জ বিএডিসি’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (বীজ বিপণন) কৃষিবিদ মো. রুহুল কবির জানান, প্রতিবছর নভেম্বরের ১০-১২ তারিখের মধ্যে বীজ আলু বিপণন করা হয়। তবে এ বছর বন্যার কারণে জেলার জমিগুলোতে এখনো পানি নামেনি। তাই এবার আরও কিছুটা সময় লাগবে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন হিমঘরে স্থানীয় কৃষকদের এখন ৮২ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন বীজ আলু মজুদ আছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। এসব বীজ জেলার জন্য পর্যাপ্তের চেয়েও বেশি। পাশাপাশি বিএডিসি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিদেশি বীজ এলে মজুদকৃত আলুর অর্ধেকই ব্যবহৃত হবে না।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘বিএডিসি আলুর দাম সরকারি ভাবে গ্রেড অনুযায়ী ৪৬-৪৭ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে বেসরকারি পর্যায় সরকার এখন পর্যন্ত বীজ আলুর দাম ঠিক করা করা নেই। এ বিষয়ে সরকারের কোনো নির্দেশনাও পাওয়া যায়নি। এমন কোনো সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশি দাম দিয়ে কৃষকরা বিদেশি বীজ কেনে। এসব বীজ থেকে উৎপাদিত আলুকে খাবার আলু হিসাবে তারা বাজারে বিক্রি করে দেয়। কিন্তু উৎপাদিত আলু পরের ২ বছর নেটিং পদ্ধতিতে বীজ হিসাবে আবাদ করা সম্ভব। একে ফাউন্ডেশন সিট বলে। এটি করা হলে বেশি দাম দিয়ে বিদেশ থেকে বারবার বীজ আলু আমদানি করতে হতো না, উৎপাদন খরচও কমে যেতো।’