Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ধীর গতি, বাড়ছে ব্যয় ও সময়


১০ নভেম্বর ২০২০ ১০:২৪

ঢাকা: বাস্তবায়নে ধীর গতি বিরাজ করছে ‘গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন: বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা প্রকল্পে’। গত আড়াই বছরে অগ্রগতি মাত্র ৫০ দশমিক ৩০ শতাংশ। এ অবস্থায় প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ছে ৩০৫ কোটি টাকা, যা মোট ব্যয়ের ৩২ দশমিক ১০ শতাংশ। সেইসঙ্গে মেয়াদও বাড়ছে এক বছর। স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এ পর্যায়ে বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে আবশ্যিকভাবে প্রকল্পটি সমাপ্ত করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়িত হলে তিন জেলার গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি ও অকৃষি অর্থনীতির সঞ্চালন ঘটবে। এছাড়া গ্রামীণ জনগণের জন্য গ্রাম, বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ১৩১ কিলোমিটার উপজেলা সড়ক উন্নয়ন, ২৭৩ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়ক উন্নয়ন এবং ৮১৭ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার গ্রাম সড়ক উন্নয়ন। এছাড়া এক হাজার ৩৭৭ দশমিক ৭৯ মিটার গ্রাম সড়কে ব্রিজ নির্মাণ, তিন হাজার ৯০০ মিটার গ্রাম সড়কে কালভার্ট নির্মাণ করা ও একশ কিলোমিটার সড়কে বৃক্ষরোপন ও পরিচর্যা এবং ২১টি গ্রোথ সেন্টার ও গ্রামীণ বাজার উন্নয়ন।

সূত্র জানায়, প্রকল্পটির মূল অনুমোদিত ব্যয় ছিল ৯৫০ কোটি টাকা। এখন প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ৩০৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে মোট ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে বাস্তবায়নের শঙ্কা সৃষ্টি হওয়ায় ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এক বছর মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, ‘প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে পাচ্ছে ৩০৫ কোটি টাকা। সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতি-২০১৬ এর অনুচ্ছেদ-২ দশমিক ৫ অনুযায়ী প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব একনেকে অনুমোদনযোগ্য। এছাড়া বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। এটির কাজ সুষ্ঠভাবে শেষ করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত সংশোধনীটি অনুমোদনযোগ্য।’

প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা ও সিদ্ধান্ত

গত ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল সেগুলো হলো- প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে অবশ্যই শেষ করতে হবে; এ সংক্রান্ত একটি সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংযোজন করতে হবে। এছাড়া ব্রিজ বা কালভার্টের হ্রাস বা বৃদ্ধির কারণ ডিপিপিতে ব্যাখা করতে হবে। বিআইডব্লিউটিএ থেকে নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে এবং ব্রিজের পাইলিং ও প্রটেকশন যথাযথভাবে শেষ করতে হবে। প্রকল্পের আওতায় ইআইএ পরামর্শকের জন্য ২০ লাখ টাকা সংস্থান বাদ দিয়ে এ খাতের ব্যয় দেড় কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। প্রকল্প এলাকার তিন জেলায় এলজিইডির নিবন্ধিত উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়ক কত এবং কী পরিমাণ রাস্তা ইতোমধ্যেই পাকা হয়েছে ও কী পরিমাণ বাকি আছে উপজেলা ও জেলাভিত্তিক সেই তথ্য সংশোধিত ডিপিপিতে উল্লেখ করতে হবে। এছাড়া গ্রাম সড়ক বাড়ানোর যৌক্তিকতা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। পিইসি সভায় অন্যান্য সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আরও কয়েকটি হচ্ছে, প্রকল্পের বিভিন্ন পূর্ত কাজের মধ্যে যেসব স্কিমের কাজ শেষ হয়েছে সেগুলোর প্রকৃত ব্যয়, যেসব স্কিম চলমান রয়েছে সেগুলোর দরপত্র মূল্য এবং যেসব স্কিমের এখনো টেন্ডার হয়নি সেগুলোর নতুন রেট সিডিউল অনুযায়ী প্রাক্কলিত ব্যয় ছক আকারে সংশোধিত ডিপিপিতে দিতে হবে। নির্মাণ কাজে সব ধরণের নির্মাণ সামগ্রীর মান নিশ্চিত করতে হবে। নির্মিতব্য কালভার্টগুলোর ওয়াল থাকলে কোনোভাবেই যেন মাটি সরে গিয়ে রাস্তা সরু হয়ে না যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। মূল প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ২১টি ঘাট প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপিতে বাদ দেওয়ার কারণ ব্যাখা করা হবে। এছাড়া দ্বৈততা পরিহারের জন্য এলজিইডির একটি কার্যকরী সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও রাজস্ব বাজেটের আওতায় রাস্তা মেরামত বা সংস্কার হয়ে থাকে। তাই এ প্রকল্প থেকে মেরামত বা সংস্কারের জন্য থোক হিসেবে প্রস্তাবিত ১০ কোটি টাকা বাদ দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পিইসি সভায় দেওয়া এসব সুপারিশ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

ধীর গতি পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর