ঢাকা: বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের মধ্যেও থেমে নেই এডিস মশার আক্রমণ। বর্তমানে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৭৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছেন হাসপাতালে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, সোমবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে থেকে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন। রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন স্থানে ভর্তি হয়েছেন আরও ছয় জন।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী পরিচালক ডা. মো. কামরুল কিবরিয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর এসএসএমসি ও মিটফোর্ড হাসপাতালে একজন ও শিশু হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও একই সময়ে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চার জন, ধানমন্ডি সেন্ট্রাল হাসপাতালে চার জন, ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে দু’জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্কয়ার হাসপাতাল, গ্রীন লাইফ মেডিকেল হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, আদ দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এ ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বাইরে ময়মনসিংহে এক জন ও যশোরে পাঁচ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কন্ট্রোল রুমের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে এখন পর্যন্ত দেশে ৭৬৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮৯ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথম ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এরপর ২০১৯ সালের জুন মাসেই ব্যাপকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। ডেঙ্গু সংক্রমণ অব্যাহত থাকে জুলাই মাসেও। আগস্ট মাসে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। পরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসেও দেশে ১৯৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।
পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা আরও কমে আসে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৪৫ জন, মার্চ মাসে ২৭ জন, এপ্রিল মাসে ২৫ জন, মে মাসে ১০ জন, জুন মাসে ২০ জন, জুলাই মাসে ২৩ জন, আগস্ট মাসে ৬৮ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৪৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। তবে অক্টোবর মাসে ফের সংক্রমণ বাড়ে। ওই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসপাতালগুলোতে মোট ১৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন।
সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও রোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার তথ্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দুইটি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ফাইল ছবি
