Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে কারা— জানতে ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি


১০ নভেম্বর ২০২০ ২২:৩৩

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নেপথ্যে যারা ছিল, তাদের খুঁজে বের করতে ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

সংসদ অধিবেশনে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করা হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পেছনে যারা জড়িত ছিল, সেই প্রকৃত খুনিদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের মুখোশ পৃথিবীর সামনে উন্মোচন করতে ট্রুথ কমিশন গঠন করতে হবে।

মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর আনীত প্রস্তাবের ওপর সাধারণের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী  সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা নিছক কোনো ব্যক্তির হত্যা ছিল না। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অর্থাৎ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় যারা বিশ্বাস করে নাই, সেই অপশক্তি ও তাদের মদতদাতারা এই হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।

মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধু ৭৩টি ট্রাইব্যুনাল করেছিলেন। সেই বিচারে প্রায় ৪ হাজার অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের বিচার কাজ চলছিল, প্রায় ৭০০-৮০০ যুদ্ধাপরাধী সেদিন দণ্ডিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনের কারণটা বোঝা যাবে এর পরের ঘটনাবলিতে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র ক্ষমতায় আসলো। তারা এসে কী করেছে? ১৯৭২ সালের সংবিধানকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল। ২৪ বছর লড়াই সংগ্রাম করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়েছিলাম। তারা সেই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে বিসর্জন দিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি চালু করে।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আজ একটা চোরকেও যদি হত্যা করা হয়, তার তার বিচার হয়। আর জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছিল, সেই হত্যার বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি দিয়ে জিয়া-মোশতক চক্র খুনিদের শুধু রক্ষাই করেনি, তাদের বিদেশে বড় বড় চাকরি দিয়ে তাদের পদায়ন করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক এবং অভিন্ন। আমাদের এই পতাকা, জাতীয় সংগীত, আমাদের এই ভূখণ্ড, আমাদের মানচিত্র যতদিন থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু স্বমহিমায় উজ্জ্বল থাকবেন।

মন্ত্রী বলেন, খুনিরা যথার্থই বুঝতে পেরেছিল— শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না, তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করা। বাংলাদেশকে হত্যা করা। তাই কেবল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নাই, তার (বঙ্গবন্ধুর) মাসুম বাচ্চা ১০ বছরের শিশু রাসেলকেও ক্ষমা করে নাই। বঙ্গমাতাসহ পরিবারের কাউকেই রেহাই দেয়নি। তারা বুঝেছিল বঙ্গবন্ধুর রক্তের ছিটেফোঁটাও যদি থাকে, তাকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতি আবার জেগে উঠবে, ঘুরে দাঁড়াবে।

‘বঙ্গবন্ধু যেদিন ফিরে এসেছিলেন, সেদিন পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছিল ৫০ লাখ লোক না খেয়ে মারা যাবে। কোটি কোটি বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু দায়িত্ব পালন করে গেছেন। যদি বঙ্গবন্ধু ফিরে না আসতেন, তাহলে কি মিত্র বাহিনী বাংলাদেশ থেকে চলে যেত?,’— প্রশ্ন রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, এখানে সংসদ নেতা আছেন। তাই একটা দাবি রাখছি। বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত খুনিদের বের করতে হবে। পৃথিবীর সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে ট্রুথ কমিশন করতে হবে। জিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়ও বলেছিল, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সরকার ছিল সেই সরকারকে অস্বীকার করে ওয়ার কাউন্সিল করে সে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল। এই ষড়যন্ত্র কেবল ১৯৭৫ সালে হয় নাই, যুদ্ধের সময় হয়েছে। এর আগেও হয়েছে।

ট্রুথ কমিশন বঙ্গবন্ধু হত্যা বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে কারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর