Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বদলি কার্যক্রম চালু নিয়ে অনিশ্চয়তায় প্রাথমিকের শিক্ষকরা


১১ নভেম্বর ২০২০ ১০:৩৩

ঢাকা: দু’বছর পর চলতি শিক্ষাবর্ষে এসে ফের চালু হয়েছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি কার্যক্রম। তবে কারোনা ঝুঁকিতে লকডাউনের কারণে মাত্র আঠারো দিন পরই বন্ধ করতে হয়েছে সেটি। এমনকি এ বছর বদলি কার্যক্রম চালু হবে কি-না তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। ফলে কর্মক্ষেত্র নিয়ে বহুদিন ধরে চলা জটিলতা এখনও জট পাকিয়েই রয়ে গেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে।

এদিকে লকডাউনের পর অফিস কার্যক্রম নতুন করে চালু হলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে বলা হয়েছিল, এ বছর থেকেই অনলাইনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি করা হবে। ফলে বদলি নিয়ে শিক্ষকদের অকারণ অর্থ ব্যয়, হয়রানি আর দালালদের খপ্পরে পড়তে হবে না। যেকোনো ধরনের ঝামেলা এড়িয়েই বদলি আবেদন করতে পারবেন শিক্ষকরা।

বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেনও বলেছিলেন একই কথা। অনলাইন বদলির জন্য একটি সফটওয়্যার ডেভলপ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি তখন বলেন, ‘এটিকে আরও কার্যকর করে অক্টোবর মাস থেকেই অনলাইন বদলি চালু করতে চাই।’

কিন্তু অক্টোবর পেরিয়ে নভেম্বর শুরু হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনলাইন কিংবা ম্যানুয়াল- কোনো বদলি নিয়েই শিক্ষকদের কোনো আশার আলো দেখাতে পারছে না কেউ। উল্টো অনলাইন বদলি নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন অনিশ্চয়তা। ফলে শিক্ষকেরা পড়েছেন বেকায়দায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন অবসরে চলে যাওয়ায় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নতুন মহাপরিচালক নিযুক্ত হওয়ার কারণেও পিছিয়ে পড়েছে এই বদলি চালুর কার্যক্রম। তবে নভেম্বর থেকে এই কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষক বদলির জন্য যে সফটওয়্যারটি ডেভলপ করা হয়েছে সেটিকে আরও বেশি উপযোগী করে তুলতে কিছুটা দেরি হয়েছে। কারণ অ্যাপটি সবার জন্য নির্ভুল ফলাফল দেবে কি-না সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

অনলাইনে বদলিতে প্রতিবন্ধী, গুরুতর অসুস্থ ও বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে এমন কিংবা বিধবা নারী, স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত শিক্ষকদের জন্য আরও সহজ করতে সফটওয়্যারটিকে উন্নতর করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব শিক্ষকদেরকে আলাদা করে প্রায়োরিটি দিতেই সফটওয়্যারটিতে আরও কিছু কমান্ড যোগ হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সফটওয়ারটি আবার ট্রায়াল দিয়ে নির্ভুলতা পরিমাপ করেই বদলি চালু করা হবে।

এছাড়া পুরনো সচিবের বিদায় ও নতুন সচিব দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কিছুটা সময় খরচ হয়েছে। অধিদফতরেও এসেছেন নতুন মহাপরিচালক। তবে মন্ত্রণালয় আশা করছে, নতুন দায়িত্ব নেওয়া সচিব ও মহাপরিচালক কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর কাজটিতে আলাদাভাবে মনোযোগ দিচ্ছি। আমরা একটি সিদ্ধান্তে আসতেও চেষ্টা করছি। এ বছরের মধ্যে বদলি কার্যক্রম শুরুর জন্য আমরা সবধরনের চেষ্টা করব।

তবে অধিদফতরের আরেকটি পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেছে, এ বছরে বদলি কার্যক্রম চালুর ইচ্ছে কারও নেই। ২০২১ সালের জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসে এটি চালু হবে। ওই সময়টাতে নিয়ম অনুসারেই বদলি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব ও সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ‘এটি তো শিক্ষকদের অনেক দিনের দাবি। কার্যক্রমটি শুরু করা খুব কঠিন কোনো কাজ নয়। ইচ্ছে থাকলেই হয়। আমি এখানে কর্মকর্তাদের ইচ্ছের অভাবকে দায়ী করব।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষকরা যদি নিজের পছন্দ মতো বিদ্যালয়ে পাঠদান করতে পারে তাহলে দেশের তো কোনো ক্ষতি হবার কথা নয়। এতে বরং পাঠদানের প্রতি তাদের অনুরাগ বাড়বে। আমাদের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। এজন্য কোনো রকম হয়রানি ও তদবির ছাড়া শিক্ষক বদলি কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে।’

উল্লেখ্য, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বদলি কার্যক্রম জানুয়ারিতে শুরু হয়ে মার্চ পর্যন্ত চলতে থাকে। এ বছর করোনার বদলি কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অনলাইন অনিশ্চয়তা বদলি কার্যক্রম শিক্ষক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর