‘টিআইবি’র প্রতিবেদন যতটা গবেষণাধর্মী, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক’
১২ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৩৮
ঢাকা: করোনাভাইরাস মোকাবিলা সংক্রান্ত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রতিবেদনকে ‘রাজনৈতিক প্রতিবেদন’ আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তীব্র নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গবেষণা পরিচালনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনায় করণীয় বিষয়ক গবেষণার সুপারিশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কথা বলা হয়েছে। আরও একধাপ এগিয়ে হয়রানিমূলক সব মামলা তুলে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদন যতটা না গবেষণাধর্মী, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। গবেষকরাও টিআইবির এই প্রতিবেদনকে গবেষণা রাজনৈতিক প্রতিবেদন হিসেবেই আখ্যা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকালে নিজের সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ের এসব কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের যেসব অনিয়মের কথা বলেছে, সেসব বিষয়ে শেখ হাসিনা সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আগেই ব্যবস্থা নিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো সংস্থা কিংবা কোনো দলের দাবি বা সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নয়, সরকার নিজ উদ্যোগেই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
টিআইবি’র প্রতিবেদনের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোথায় সুনির্দিষ্ট দুর্নীতি হয়েছে, কোথায় ঘুষ নেওয়া হয়েছে প্রণোদনা থেকে— এসব তালিকা দিলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সরকার এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিশ্বসমাজ করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা করছে উল্লেখ করে সরকারের এই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্ব প্রশংসা করলেও সরকারের ন্যূনতম একটি ভালো উদ্যোগও টিআইবি’র গবেষক দলের চোখে পড়েনি। এটি খুবই দুঃখজনক। ফলে গবেষণার উদ্দেশ্য এবং বিধেয় নিয়ে জনমনে অবিশ্বাস ও প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। জনগণ মনে করে— এ গবেষণা সমাজ গবেষণার সুনির্দিষ্ট কাঠামোর আওতায় নয়, এটি রাজনৈতিক কিংবা ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে পরিচালিত।
তিনি বলেন, করোনা মহামারি বিশ্বে এক নতুন অভিজ্ঞতা। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। তার মধ্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আশঙ্কার চেয়ে অনেক ভালো আছে বাংলাদেশ। শীতকালে সম্ভাব্য দ্বিতীয় তরঙ্গ মোকাবিলা করতেও এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
এ দেশের যত অর্জন, তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আওয়ামী লীগ তার শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকা নিয়ে অধিকার হরণকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। রাজপথের আন্দোলনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের অকুতোভয় কর্মীরা। দেশের প্রয়োজনে আত্মদান দলের নেতাকর্মীদের শিখিয়ে দিতে হয় না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা অন্ধকারের চোরাগলি, ষড়যন্ত্র ও হত্যা-সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে, তারা ইতিহাসের কাঠগড়ায় কাপুরুষ।
করোনা মহামারির মধ্যে বিএনপি অসহায় মানুষের জন্য কী করেছে— সে প্রশ্নও রাখেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এটা তাদের বিবেকের কাছেই প্রশ্ন— তারা অসহায় মানুষদের জন্য কী করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা করোনার শুরু থেকে জনগণের পাশে ছিল। আর সে কারণেই তারা করোনায় বেশি আক্রান্তও হয়েছে এবং প্রাণও হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের করোনা মোকাবিলা টিআইবির প্রতিবেদন রাজনৈতিক প্রতিবেদন