Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যারা আত্মসমর্পণ করেনি তাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে’


১২ নভেম্বর ২০২০ ১৬:৪৪

চট্টগ্রামের বাঁশাখালী থেকে: জলদস্যুদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা আত্মসমর্পণ করছেন তাদের হত্যা ও ধর্ষণ মামলা ছাড়া অন্যান্য মামলা থেকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে। আর যারা আত্মসমর্পণ করেনি তাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। এছাড়া গডফাদারদের তালিকাও আমরা হাতে পেয়েছি। তাদেরও রেহাই দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৩৪ জলদস্যুর আত্মসমর্পণ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

৩৪ জলদস্যু আত্মসমর্পণের ঘটনায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘যারা এখনও আত্মসমর্পণ করেননি তাদের জন্য স্পষ্ট বার্তা হলো- আপনারা পালিয়ে বেড়াতে পারবেন হয়তো। কিন্তু আস্তানা গড়তে পারবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। পালিয়ে বাঁচতে পারবেন না।’

তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ের ন্যায় আজ যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকার সহযোগিতা করবে। পুনর্বাসন করা হবে সবাইকে। তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। আর যারা এখনও নদী, সাগর বা পাহাড়ে থাকতে চান তাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ। তাদের যারা মদদ দিচ্ছেন তাদের পরিণতি হবে আরও ভয়াবহ।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দস্যুতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো অপরাধী অপরাধ করে পার পাবে না। র‍্যাব, পুলিশসহ সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আধুনিকায়নে বিশেষ করে র‍্যাব ও পুলিশের জন্য সরকার প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, গাড়িসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। মাদকের অবাধ প্রবাহ রোধকল্পে র‍্যাবের অনেক ভূমিকা রয়েছে। করোনোর মধ্যেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে অনেক মানবিক অবদান রেখেছে।’ করোনাকালে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত পুলিশের ৭৫ জন এবং র‍্যাবের ৫ জন সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, ‘খুব শিগগিরই বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলকে জলদস্যু ও ডাকাত মুক্ত ঘোষণা করব। আমরা সেই সুন্দর দিনের অপেক্ষায় আছি।’

তিনি বলেন, ‘র‍্যাব সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করেছে। এজন্য তাদের অশেষ ধন্যবাদ। র‌্যাব চট্টগাম বিভাগের সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকাগুলোকেও দস্যুমুক্ত করবে বলে আশাবাদী। এর ফলে সমুদ্র বিজয়ের সুফল ভোগ সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘র‍্যাব-৭ প্রতিষ্ঠা থেকেই বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে জলদস্যুতা দমনে কঠোর অবস্থান নেয়। এরই অংশ হিসেবে বাঁশখালী-কুতুবদিয়া-মহেশখালী বিস্তৃত অঞ্চলে উপকূলীয় এলাকায় জলদস্যুদের দমন, দেশীয় অস্ত্র তৈরির কারখানা ও কারিগরি এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। তাদের সাঁড়াশি আভিযানিক কর্মকাণ্ডে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যুরা নিষ্ক্রিয় হতে থাকে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে র‍্যাবের পক্ষ থেকে সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ করানো ছিল যুগান্তকারী ঘটনা। ২০১৬ সালের ৩১ মে মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই অগ্রযাত্রা শুরু হয়। এই পর্যন্ত র‍্যাব-৬ ও র‍্যাব-৮ কর্তৃক ৩২টি বিভিন্ন বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু, বনদস্যু, ডাকাত ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ৪৬২টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪টি গোলা-বারুদসহ র‍্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। অধিকাংশ জলদস্যু আজ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিনে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকে সুন্দরবন অঞ্চলে নতুন করে কোন জলদস্যু বাহিনীর আর্বিভাব ঘটেনি।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সরকার বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও পর্যটননগরী কক্সবাজারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। সরকারের ১০টি ফাস্ট ট্র্যাক মেগা প্রকল্পের মধ্যে তিনটিই এই অঞ্চলে। একটি মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, একটি এলএনজি টার্মিনাল এবং আরেকটি বঙ্গবন্ধু টানেল। যা এই অঞ্চলে এনে দিবে অর্থনৈতিক প্রাণ।’

আত্মসমর্পণ আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল কঠিন পরিস্থিতি জলদস্যু টপ নিউজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর