Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে বিতর্ক আনা উচিতই না— সংসদে এমপি হারুন


১৩ নভেম্বর ২০২০ ০০:৩১

হারুন অর রশিদ, ফাইল ছবি

ঢাকা: মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ ২০ বছরের সংগ্রাম-লড়াইকে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। স্বাধীনতার ঘোষক কে— এটি নিয়েও বিতর্ক হওয়া উচিতই নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এমপি হারুন বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক কে আর কে ঘোষক নয়— এটি নিয়ে যদি বিতর্ক করা হয়, তার মধ্য দিয়ে কি শেখ মুজিবকে বড়-ছোট করা যাবে? আমরা যদি এই জায়গা থেকে বির্তক দূর করে দিতে পারি, তাহলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আমি মনে করি এইখানে এই ধরনের বির্তক আনা উচিতই না।

আরও পড়ুন- বেগম মুজিবের ২ সিদ্ধান্ত ইতিহাসের মাইলফলক: আমু

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধুর ওপর আনীত সাধারণ প্রস্তাবের ওপর বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি’র এই সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন।

জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্যে হারুনুর রশীদ বলেন, আমি একটি কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই— ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক ছিল। ওই সময় তিনি যদি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতেন, তাহলে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পাকিস্তানি শাসকরা বলত শেখ মুজিব বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা। মুজিব বাংলাদেশকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এই বিষয়টি বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন। তাই তিনি পালিয়ে যাননি। এটি ছিল তার সঠিক সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, শেখ ‍মুজিবের যে দীর্ঘ ২০ বছরের কষ্টার্জিত সংগ্রাম-লড়াই, এ দেশের মানুষের অধিকারের জন্য সেটা অস্বীকার করার পথ নাই। সেটাকে কেউ অস্বীকার করে না, করা যায় না। আর এই লড়াই সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে।

বিএনপি’র এই সংসদ সদস্য বলেন, আমার জন্ম ষাটের দশকে। আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের ছাত্র। এখানে সিনিয়র নেতারা ধারাবাহিকভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন। আমি নিঃসন্দেহে মনে করি এটা প্রয়োজন ছিল।

রাষ্ট্রপতির ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে এমপি হারুন বলেন, রাজনৈতিক মতাদর্শের যত অমিলই থাকুক না কেন, বঙ্গবন্ধু কোনো বিরোধী দলের নেতাকে কটাক্ষ করে কিছু বলতেন না। বরং তাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। রাজনৈতিক শিষ্টাচার তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট ছিল। বঙ্গবন্ধু বিরোধী দলের নেতাদের কটাক্ষ করতেন না, সমালোচনা করতেন না, উপহাসও করতেন না। বরং তাদের স্নেহ করতেন, শ্রদ্ধা করতেন, সম্মান করতেন। তার বিভিন্ন লেখনিতেও এ বিষয়টি উঠে এসেছে।

‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে তার আদর্শ যথার্থভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বছরব্যাপী যে আয়োজন করেছেন, এটি প্রশংসনীয়। কিন্তু আজ গোটা বিশ্ব মহাসংকটের মধ্যে। বাংলাদেশও সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। আমরাও একটা মহাসংকট মোকাবিলা করছি। সেই মোকাবিলার পাশাপাশি মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমাদের উচিত ছিল রাষ্ট্র মেরামতের পদক্ষেপ নেওয়া। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। আজকে বাংলাদেশে ধর্ষণ ব্যাপক আকার ধারণ করছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, সুশাসনের বড় অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের উচিত ছিল, এ বছর গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র মেরামত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা,’— বলেন এমপি হারুন।

তিনি আরও বলেন, বেহাল দশা দেখছি। এই চিত্র কল্পনা করা যায়? আজকের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন, প্রতারণা আর দুর্নীতি। জনগণের অর্থ লুটপাট করাকে রাজনীতি বলা যায় না। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধের চরম আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের জায়গায় যেতে পারব।

হারুন বলেন, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বলছেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে পরমতসহিষ্ণুতা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। এটি রাষ্ট্রপতি তার ভাষণের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। আজ বিবেচনা করতে হবে— এই জায়গাগুলো নষ্ট করে ফেলেছি, নষ্ট হয়ে গেছে। কিভাবে এই জায়গাগুলোকে ফিরিয়ে আনব— এটি মুজিবর্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে আলোচনা করব, পাশাপাশি এই জায়গাগুলোকে কিভাবে নিশ্চিত করব— তার পরিকল্পনাও থাকতে হবে।

ফাইল ছবি

এমপি হারুন টপ নিউজ বিএনপির সংসদ সদস্য মুজিববর্ষ মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন সংসদ অধিবেশন স্বাধীনতার ঘোষক হারুনুর রশিদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর