কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আর নেই
১৫ নভেম্বর ২০২০ ১৩:০৯
ঢাকা: ভারতের হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা ওপার বাংলার কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় মারা গেছেন। কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত ৬ অক্টোবর থেকে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।
শনিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সৌমিত্রের শারীরিক অবস্থা এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এ অবস্থা থেকে ফিরে আসা কার্যত অসম্ভব। ওই অভিনেতার চেতন স্তরও কমে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা অলৌকিক কিছু ঘটার অপেক্ষায় ছিলেন।
করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় গত মাসে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ৮৫ বছর বয়সী সৌমিত্রকে। প্রায় দশ দিন চিকিৎসার পর ১৬ অক্টোবর তার করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে, শরীরিক অবস্থারও কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতা থাকায় তার অবস্থার আবার অবনতি হতে শুরু করে। প্রস্টেটের পুরনো ক্যান্সারও আবার ফিরে আসে, সেই সঙ্গে ছিল শ্বাসতন্ত্রের পুরনো সমস্যা।
তিনদিন আগে সৌমিত্রর শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসকরা। এর মাঝেই শুক্রবার থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
সত্যজিত রায়ের অপু ও ফেলুদা চরিত্রের রূপায়ন করে চলচ্চিত্র সমালোচকদের মনে স্থায়ী আসন নিয়ে আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অনেকে তাকে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করেন। সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার মধ্যে ১৪টিতেই তিনি অভিনয় করেছেন।
১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘অপুর সংসার’-এ প্রবেশের পর অক্লান্তভাবে অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন সৌমিত্র। পাশাপাশি বহু নাটকেও অভিনয় করেছেন; লিখেছেন গান ও নাটক। এ ছাড়া তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ আবৃত্তিকারও।
চলচ্চিত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ছাড়াও ফ্রান্স সরকারের ‘লিজিয়ন অব দ্য অনার’ পদকে ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা। ২০০৪ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতাবে ভূষিত করে ভারত সরকার।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৫ সালের জানুয়ারিতে। তিনি কবি এবং অনুবাদকও। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমহার্স্ট স্ট্রীট সিটি কলেজে, সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি ছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে। আগে থেকেই পরিবার সদস্যরা নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে বসবাস করতেন। কৃষ্ণনগরের সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল।