Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তত্ত্বাবধায় সরকার বাতিল নিয়ে সংসদে মৃদু বিতর্ক


১৬ নভেম্বর ২০২০ ২২:০৯

ঢাকা: বিলুপ্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সংসদে মৃদু বিতর্ক হয়েছে। বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ তত্ত্বাবধায় সরকার বাতিল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরে একটি বিল পাসের আগে বিষয়টি নিয়ে যুক্তি তুলে ধরেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে সামুদ্রিক মৎস বিল-২০২০ পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী। এদিন বিলের দফায় সংশোধনী ও জনমত যাচাই-বাছাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে হারুনুর রশীদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কথা তোলেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির দলীয় সংসদ সদস্য হারুন বলেন, ‘সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে সন্তুষ্ট করা।’ জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত করার জন্য সেই রায়টি হয়েছিল। এটা সরকারকে খুশি করার জন্য কোনো রায় নয়।

সামরিক শাসনামলে জারি করা সমস্ত অধ্যাদেশ বাতিল করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের যে সমস্ত রায় দেওয়া হয়, সমস্ত রায় কি আমরা কার্যকর করি, মানি? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে অবজারবেশন দেওয়া হয়েছিল, যে রায় দেওয়া হয়েছিল সেগুলো কার্যকর করা হয়নি। ২০১১ সালে সরকারকে সন্তুষ্ট করার জন্য এই রায়টি দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ পঞ্চদশ এবং সপ্তদশ সংশোধনী বাতিল করলাম অথচ ওই সময় যে সমস্ত কর্মকাণ্ড আজ পর্যন্ত ওই আইন দ্বারা চলমান রয়েছে, সেগুলোকে কিভাবে বাতিল করব? ওই আইনের কার্যকারিতার কি প্রয়োজন নেই? আজ ওই সময়ের সমস্ত আইনকে অবৈধ করে দিলেন। তাহলে ওই সময় যে সমস্ত আইন দ্বারা কার্যকর সেগুলোর কি হবে?’

বিজ্ঞাপন

জবাবে মৎস ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘কেয়ারটেকার গভর্নমেন্টের অবজারবেশনকে আমরা মানি নাই কেন? এরকম একটা কথা বলতে চেয়েছেন। অবজারবেশনটা কতটুক ছিল? সংসদ চাইলে। তৎকালীন সংসদ চায়নি। অবজারবেশন কোনো ডিসিশন না। আর অবজারবেশনের অপশনটা পার্লামেন্টে দেওয়া হয়েছিল। পার্লামেন্ট যেটাকে যথার্থ মনে করেছে, সেটিই করেছে। সরকারকে খুশি করার জন্য পঞ্চদশ এবং সপ্তদশ সংশোধনী হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনা অনুচ্ছেদ ১ থেকে শুরু করে শেষ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত কোথাও মার্শাল ল নামক কোনো আইন নাই, কেউ কাউকে অথরিটি দেয়নি। চাকুরিতে থাকা অবস্থায় আমি এসে দাঁড়িয়ে বলব, দেশবাসী আমি দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। আমাদের সংবিধান কী বলছে। যদি রাষ্ট্রপতি না থাকেন উপ-রাষ্ট্রপতি আছেন, উপ-রাষ্ট্রপতি যদি না থাকেন স্পিকার রয়েছেন। কে সামরিক শাসকদের, সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের অথরিটি দিয়েছিল ক্ষমতা দখল করার? ইউনিফর্ম পরে- আমি প্রার্থী আমাকে ভোট দেবেন না? হ্যাঁ বা না ভোট? কোনো কোনো জায়গায় নাকি ১০১ শতাংশ ভোট দেওয়া হয়েছিল। এই জাতীয় ত্রুটি নিয়ে যারা আসছেন তাদের লিগ্যাল কোনো স্ট্যান্ড না থাকার কারণেই সর্বোচ্চ আদালত সেই রায় দিয়েছেন। সেই রায় সরকারকে খুশি করার জন্য নয়, বাংলাদেশের সাংবিধানিক ব্যবস্থাকে সমুন্নত করার জন্য।’

বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ‘যখন কেউ ক্ষমতায় থাকে তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথেচ্ছা ক্ষমতা দিতে খুব ভালো লাগে। গৃহ তল্লাশি, বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি- সেগুলো তো গুচ্ছ ক্ষমতা। পারলে বিনা বিচারের হত্যার ক্ষমতা, দেখামাত্র গুলি করার ক্ষমতা- এগুলো দিতে খুব আরাম লাগে। কিন্তু ক্ষমতা থেকে যখন চলে যায় তখন বোঝা যায় যে, এই ধরণের ক্ষমতার ফল কী হতে পারে।’ এ সময় তিনি মোবাইল কোর্ট নিয়ে একটি মামলার বিষয়েও সরকারের সমালোচনা করেন।

অধিবেশন তত্ত্বাবধায় সরকার বাতিল মৃদু বিতর্ক সংসদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর