Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বোনের ধর্ষণ মামলা তুলে না নেয়ায় ভাইকে অপহরণ ও নির্যাতন


১৮ নভেম্বর ২০২০ ১৮:০৬

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা তুলে না নেওয়ায় ধর্ষণের শিকার নারীর ভাইকে অপহরণের পর হাত-পা বেঁধে বস্তাবন্দি অবস্থায় ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার সোয়ালিয়া ব্রীজ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে আজ বুধবার সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আহত ওই যুবকের বোন (ধর্ষণের শিকার নারী) জানান, সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত সংঘধর্ষণ মামলা তুলে নেওয়ার কারণে আসামি ও তাদের স্বজনরা তার ভাইসহ পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এরই জেরে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে তার ভাই বাড়ি থেকে অসুস্থ মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে শ্যামনগর উপশহরে যাওয়ার সময় তাকে অপহরণ করা হয়। মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সোয়ালিয়া ব্রীজের পাশ থেকে হাত-পা বাধা বস্তাবন্দিসহ মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি এ সময় অভিযোগ করে বলেন, তার দায়েরকৃত মামলায় নিশ্চিত শাস্তি জানতে পেরে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. জুবায়ের জানান, ওই যুবকের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ভারি জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এছাড়া শরীরে বিষাক্ত কোন তরল পুশ করা হয়েছে। তাকে জরুরী ভিত্তিতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের সুকুমার মন্ডল ও দেবীপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক গোলাম রসুল ওই নারীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ফুলবাড়ি গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের মৎস্য ঘেরের বাসায় নিয়ে যায়। ওইদিন তারা বহু প্রতিশ্রুতি দিয়ে হুজুর ডেকে ছিদ্দিকের সঙ্গে ওই নারীর কাল্পনিক বিয়ে দেয়। এরপর তারা স্বামী স্ত্রী হিসেবে কিছুদিন সময় পার করার একপর্যায়ে ওই বছরের ১১ জুন সকালে খুলনায় একটি বাড়িতে তাকে আটকে রেখে ৫ দিন ধরে ছিদ্দিক, গোলাম রসুল ও সুকুমার ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ওই বছরের ২৬ জুলাই ওই নারী বাদি হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে তারা বিভিন্ন সময় মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাদের হুমকি দিয়ে আসছিল। ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর এ মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক বদলী হওয়ায় দিন পরিবর্তন হয়।

অপহরণ ধর্ষণ মামলা সাতক্ষীরা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর