Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে আ.লীগ নেতার ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর


১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৫৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিনের ওপর হামলার পাশাপাশি তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলার জন্য নিজ দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ গ্রুপকে দায়ী করেছেন গিয়াসের অনুসারীরা। এ ঘটনার পর মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের নিজামপুর কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আউয়াল তুহিন। তিনি নিজেও একই হামলায় আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের মূল নিয়ন্ত্রণ এখনও একসময়ের সভাপতি মোশাররফের হাতেই বলে মনে করেন দলটির নেতাকর্মীরা।

২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত মীরসরাই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন মোশাররফের ভাবশিষ্য হিসেবে পরিচিত উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সে সময়কার যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সম্পর্কের অবনতি হলে গিয়াস উদ্দিন আর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পাননি। উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকেও ছিটকে পড়েন।

এরপর থেকে মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগে মোশাররফ এবং গিয়াসের নেতৃত্বে দু’টি পৃথক ধারা সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে গিয়াস উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছিলেন। ২১ ভোটে তিনি হারেন মোশাররফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত শেখ আতাউর রহমানের কাছে, যিনি মীরসরাইয়ের বাসিন্দা। আগের কমিটির মতো প্রস্তাবিত কমিটিতেও গিয়াস উদ্দিনকে সদস্য পদে রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গিয়াস উদ্দিনের অনুসারী আব্দুল আউয়াল তুহিন সারাবাংলাকে জানান, মীরসরাইয়ের পার্শ্ববর্তী সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে ২০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষ গ্রুপ বুধবার গভীর রাতে মীরসরাই উপজেলার নিজামপুর এলাকায় তুহিনের বাসায় হামলা চালায়। তার মোটর সাইকেল পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে গিয়াস উদ্দিন যান তুহিনের বাড়িতে। সকাল ৮টার দিকে সেখান থেকে ফেরার পথে নিজামপুর কলেজের সামনে তার পথরোধ করে ১৫-২০ জন যুবক। তারা অতর্কিতভাবে গিয়াসের পাজেরো গাড়ি ভাঙচুর করে এবং তার ওপর হামলা চালায়।

তুহিন বলেন, ’১৫-২০ জন লোক, সবার হাতে লাঠিসোঠা, লোহার রড, রামদা ছিল। আমি নেতাকে (গিয়াস উদ্দিন) গাড়িতে তুলে দিচ্ছিলাম। তখন তারা আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। হঠাৎ করে গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। একজন দা দিয়ে আমার নেতাকে কোপ দিতে চাইলে তিনি হাতে ধরে ফেলেন। কয়েকজন এসে আমাদের দু’জনকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। ১০-১৫ মিনিট পর তারা আবার নিজেরাই চলে যায়। হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রলীগও আছে, যুবলীগও আছে। তারা আমাদের প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মী।’

হামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ‍উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘অসমর্থিত সূত্রে জানতে পেরেছি, গিয়াস সাহেবের ওপর হামলা হয়েছে। তবে কি জন্য হামলা হয়েছে, কারা হামলা করেছে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে হামলা হলেও অনেকে এখন রাজনৈতিক রঙ লাগায়। এটাও তেমনই হতে পারে।’

এদিকে হামলার পর পুলিশ গিয়ে ভাঙচুর হওয়া গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আহত গিয়াস উদ্দিনকে পুলিশ প্রহরায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

হাসপাতালে থাকা গিয়াসের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী মহসীন ভূঁইয়া সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, গিয়াস উদ্দিনের কাঁধে দায়ের কোপ লেগেছে। এছাড়া তার পিঠে ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। তাকে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।

মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘হামলার অভিযোগ মৌখিকভাবে পেয়েছি। শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম এবং উনাকে (গিয়াস উদ্দিন) নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এলাকায় যাতে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেটা আমরা দেখছি। ঘটনাটি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের কি না জানি না, তবে উনি রাজনীতি করেন।’

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

আওয়ামী লীগ নেতা গাড়ি ভাঙচুর টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর