উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, জনগণকে উন্নত সেবা দিন: আইজিপি
২০ নভেম্বর ২০২০ ০৮:৪৭
ঢাকা: পুলিশিংয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুপারভিশন ও মনিটরিং বাড়িয়ে জনগণকে দ্রুততম সময়ে উন্নত সেবা দিতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী খ্যাতিসম্পন্ন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সদর বদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানা জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে (ডিএমপি) কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের তৃতীয় ও শেষ দিনে আইজিপি মতবিনিময় করেন সহকারী পুলিশ কমিশনার ও এর চেয়ে ঊর্ধ্বতন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
মতবিনিময় সভায় আইজিপি ফের তার পাঁচ নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের বলেন, জনগণের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ ও শারীরিক নির্যাতন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আইন প্রয়োগে আইনি সক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে। মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। ভালো কাজ করলে মানুষ যে প্রশংসা করে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে তার প্রমাণও পুলিশ পেয়েছে।
মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে লড়াই করে দেশকে মাদকমুক্ত করতে হবে বলেও ফের প্রত্যয় জানান আইজিপি। পুলিশের সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ড. বেনজীর বলেন, পুলিশ সদস্যদের দুর্নীতিমুক্ত থাকতে হবে। বর্তমানে প্রচলিত কল্যাণের ধারণা থেকে বেরিয়ে পুলিশ সদস্যদের চাকরিকালীন এবং বৃহত্তর কল্যাণের ব্যবস্থা করা হবে। একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে পুলিশ সদস্যদের শৃঙ্খলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। শৃঙ্খলার সঙ্গে ‘ওয়েলফেয়ার’কে গুলিয়ে ফেলা যাবে না।
পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে জানিয়ে ড. বেনজীর বলেন, প্রশিক্ষণকে আরও প্রায়োগিক ও কাঠামোবদ্ধ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, হার্ভার্ডসহ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) সইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য যেন আমাদের পুলিশ সদস্যরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে জনগণকে আরও উন্নত ও আধুনিক পুলিশি সেবা দিতে পারে। পেশাগত দক্ষতা ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে নিয়মিত পড়ালেখা করার পরামর্শ দেন।
উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে ‘ফিউচার লিডার্স’ আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, আমরা অনেক দূরে এসেছি। বাংলাদেশ পুলিশকে আরও বহু দূর নিয়ে যেতে হবে। দেশ ও দেশের জনগণকে সেবা দেওয়ার চেতনা নিয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। গর্ব নিয়ে চাকরি করতে হবে, চাকরিতে ‘প্রাইড’ নিয়ে আসতে হবে।
ডিএমপিকে ‘মিরর অব বাংলাদেশ পুলিশ’ অভিহিত করে আইজিপি বলেন, এই ইউনিটের গুরুত্ব উপলব্ধি করে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান এবং ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফাইল ছবি