‘উন্নয়নের মাইলফলক’ বীরপ্রতীক গাজী সেতুর উদ্বোধন রোববার
২১ নভেম্বর ২০২০ ১৪:৪৩
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘বীরপ্রতীক গাজী সেতু’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে রোববার (২২ নভেম্বর)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করবেন। এ সেতুটির কারণে বদলে যাচ্ছে পুরো রূপগঞ্জের চিত্র।
রূপগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। তিনি বলেন, ‘বীরপ্রতীক প্রতীক গাজী সেতু আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের মাইলফলক। এ সেতুর কারণে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি রাজধানীর সঙ্গে রূপগঞ্জের দূরত্ব কমবে।’
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রচেষ্টায় এ সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদীর ওপরে আরও তিনটি ব্রিজ আছে সেগুলো হচ্ছে কাচপুর ব্রিজ, কাঞ্চন ব্রিজ ও সুলতানা কামাল ব্রিজ। এ অঞ্চলে বিপুল জনগোষ্ঠীর বাস। রয়েছে কলকারখানাও। এখন সেতুটি চালু হওয়ার পর অন্য ব্রিজগুলোর ওপর চাপ কমবে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য সরবরাহ সহজ হবে।
স্থানীয়দের অভিমত, রূপগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা আর্থসামাজিক উন্নয়নে শীতলক্ষা নদী উপর নবনির্মিত বীরপ্রতীক গাজী সেতুটি খুলে দিয়েছে এ অঞ্চলের সম্ভাবনার নতুন দ্বার। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ পুরো অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীবনযাত্রার মানে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’
বীর প্রতীক গাজী সেতু প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর একান্ত প্রচেষ্টায় সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। এ সেতুটি হওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হবে। রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াত আরও সহজ হবে। সেতুটি এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতে দারুণ ভূমিকা রাখছে। সেতুটি এ অঞ্চলের ইতিবাচক আর্থসামাজিক পরিবর্তনের সুযোগ এনেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান ও বাণিজ্য সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।’
বীর প্রতীক গাজী সেতুটি নির্মাণের কারণে রূপগঞ্জের মানুষের ভোগান্তি হ্রাস পাবে জানিয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জাহেদ আলী বলেন, ‘এই সেতুটি নির্মাণে পুরোটাই অবদান এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর। তিনি এই সেতুটি নির্মাণের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। দিনের পরদিন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন। সেতুটি হওয়ায় এখন রূপগঞ্জের মানুষের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়বে।’
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, ‘রূপগঞ্জবাসীর স্বপ্ন ছিল এই সেতু। বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রচেষ্টায় সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। সেতুটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হলে শীতলক্ষ্যার দুই পারে মুড়াপাড়া ও কায়েতপাড়ার মধ্যে যোগাযোগ অনেক সহজ হবে।’
রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়া বলেন, ‘এ সেতুর কারণে শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ের মানুষের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। সেতু নির্মাণে দীর্ঘদিনের অবহেলিত এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটছে। ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প-কারখানার মালামাল পরিবহনে সময় ও ব্যয় কমে আসছে। তাতে কারখানার শ্রমিক, কর্মচারী, মালিক ও এলাকাবাসী লাভবান হচ্ছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক-এর নামে সেতুটির নামকরণ করায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের দড়িকান্দি এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ২০১২ সালের জুলাই মাসে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর দৈর্ঘ্য ৫৭৬ দশমিক ২১ মিটার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭৪ কোটি ৯ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।