Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে বিজিবির মামলার শুনানি কাল


২১ নভেম্বর ২০২০ ২২:২৭

টেকনাফ দমদমিয়া বিওপি’তে তল্লাশির নামে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দায়ের করা মামলার শুনানি কাল রোববার (২২ নভেম্বর)। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটির শুনানি হবে। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ব্লাস্টের এক কর্মী বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছিলেন। তবে অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দেখাতে না পারায় মামলাটি রেকর্ড করেনি টেকনাফ থানা।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২১ নভেম্বর) বিজিবি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি এই মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে ওই তরুণীর আনা অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বিজিবি বলছে, টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধীন দমদমিয়া বিওপিতে কর্মরত জেসিও-৭৮৩৬ নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী মোল্লা ও তার সহকর্মীদের চৌকস একটি টহল দল গত ৮ অক্টোবর দমদমিয়া চেকপোস্টে সরকারি নিয়ম মেনে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লেদা থেকে টেকনাফগামী একটি সিএনজি চেকপোস্টের কাছে এলে তাতে অবস্থানরত পাঁচ জনকে তল্লাশির জন্য থামানো হয়। অন্য যাত্রীরা তল্লাশিতে সহযোগিতা করলেও এক তরুণী সিএনজি থেকে নামেননি। তাকে তল্লাশির জন্য নামতে বললে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। সাম্প্রতিক সময়ে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের প্রাদুর্ভাব বিবেচনায় তাকে সম্ভাব্য ইয়াবা পাচারকারী সন্দেহে পরে তাকে সিএনজি থেকে নামিয়ে নারী তল্লাশি রুমে নিয়ে নারী সৈনিকদের মাধ্যমে তল্লাশি করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে অপেশাদার কোনো আচরণ করা হয়নি। তল্লাশিতে তার কাছে মাদক বা অবৈধ কোনো পণ্য না পেলে ১০টা ৩৬ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি বলছে, দমদমিয়া চেকপোস্ট থেকে হতে একটি গাড়িতে উঠে ওই তরুণী তার অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। এসময় তার জন্য গাড়ি বরাদ্দ না করায় সাধারণ যানবাহন ব্যবহার করতে গিয়ে বিজিবির তল্লাশির মুখে পড়ার অভিযোগ করে ক্ষোভ জানান। পরে ৯ অক্টোবর তিনি টেকনাফ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন, বিজিবি চেকপোস্টে দায়িত্বরত প্রহরীরা তাকে ধর্ষণ করেছেন। তবে অভিযোগের পক্ষে প্রয়োজনীয় প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় মামলাটি রেকর্ড হয়নি। পরে নিজেকে ধর্ষণের শিকার দাবি করে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজিবি বলছে, ওই তরুণী চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় একাধিক প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় ‘কক্সবাজারে চেকপোস্টে ব্লাস্ট কর্মীকে ধর্ষণ’ ও এরকম শিরোনামে সংবাদ পরিবেশিত হয়। পরে দৈনিক যুগান্তর তাদের পত্রিকায় ভুল ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশেনের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে। বিজিবি বলছে, প্রকাশ্য দিবালোকে অসংখ্য যানবাহন ও যাত্রীর উপস্থিতিতে দমদমিয়া বিজিবি চেকপোস্টে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১০টা ৩৬ মিনিট, অর্থাৎ ছয় মিনিটের মধ্যে একজন নারীর ধর্ষণের শিকার হওয়ার দাবি বাস্তবতাবিরোধী। ওই তরুণী ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ এবং কর্মস্থলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেওয়ার উদ্দেশ্যকে জোরালো করার জন্য সরকারি বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও অভিযোগ এনে এবং গণমাধ্যমের সহানুভূতিকে চতুরতার মাধ্যমে নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করে বিজিবির মতো পেশাদার ও স্বনামধন্য বাহিনীকে হেয় করার অপচেষ্টা করেছেন। বিষয়টি এরই মধ্যে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

এ ঘটনায় বিজিবি’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের মাধ্যমে অপূরণীয় ক্ষতির কারণে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে গত ১০ নভেম্বর জেসিও-৭৮৩৬ নায়েব সুবেদার মোহাম্মদ আলী মোল্লা বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আদালত নম্বর-০৪, সদর, কক্সবাজারে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৫০০ ধারায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ মামলাটির প্রয়োজনীয় তদন্ত করে প্রতিবেদন সাত কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে দাখিল করার জন্য টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামীকাল রোববার (২২ নভেম্বর) মামলাটির শুনানির দিন নির্ধারণ করা রয়েছে।

কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ধর্ষণের অভিযোগ বিজিবির মামলা মামলার শুনানি মিথ্যা অভিযোগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর