Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘দরিদ্রদের বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়ার জন্য কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন’


২২ নভেম্বর ২০২০ ০১:৩৩

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে নিরাপদে থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। নো মাস্ক, নো সার্ভিস আওতায় এনে মাস্ক পরায় উৎসাহিত করতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যের মাস্ক দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে ভূমিকা নিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেই কর্মকর্তাদের যারা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নেতৃত্ব দিবেন।

শনিবার (২১ নভেম্বর) সারাবাংলা ডটনেটের নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। এদিন ‘সারাবাংলা ফোকাসে’ আলোচনার বিষয় ছিল ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ভ্যাকসিনের বিকল্প’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের সিনিয়র নিউজরুম এডিটর রাজনীন ফারজানা। ভার্চুয়াল এই আলোচনায় অতিথি ছিলেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জুবায়দুর রহমান ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী।

আলোচনার শুরুতেই বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক আমাদের এখানে সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। মৃত্যু সংখ্যা কিছুটা ওঠানামা করছে। রোগতাত্ত্বিক সূত্র অনুযায়ী আমরা বলতে পারি যে, শনাক্তের সর্বনিম্ন হার যেটা ১০ থেকে ১২-র মধ্যেই ওঠানামা করছিল সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সেটা যদি দেড়গুণ হয়েছে। যদি এই বৃদ্ধির হার চার সপ্তাহ ধরে থাকে তবে বলা যাবে আমরা দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রবেশ করেছি। বর্তমানে যে হারে সংক্রমণ আছে তা যদি আগামী সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী থাকে ও তার পরের সপ্তাহে বেড়ে যায় তখন হয়তোবা আমরা বলতে পারি দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা। যদিও তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাবে না। আবার যদি আগামী সপ্তাহে এটা নেমে যায় তবে সেক্ষেত্রে বলতে হবে এটি সাময়িকভাবে বেড়েছিল, যা নেমে গেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের রোববার (২২ নভেম্বর) থেকে দেখতে হবে পরবর্তী সময়ে দৈনন্দিন শনাক্তের হার কত।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জুবায়দুর রহমান বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমরা জানি যে, কোনো রোগের চিকিৎসার চেয়ে সেটি যেন না হয় সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে। সরকার বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের মাধ্যমেও নানাভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। মাঝে একটু শিথিলতা দেখা গেলেও এখন প্রায় সব জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে। নো মাস্ক, নো সার্ভিস চলার কারণে অনেকে বাধ্য হয়েও মাস্ক পরছে। আসলে ভ্যাকসিন আসার আগে মাস্ক ব্যবহারই আমাদের নিরাপদে রাখতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক জায়গায় আইন মানানোর চেষ্টা করছে। এখন প্রায় সব জায়গায় প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। যে কারণে এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি মাস্ক পরা হচ্ছে। আমাদের ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা নানাভাবে চেষ্টা করছেন যার যার এলাকাতে। আমাদের আলাদাভাবেও নজরদারি থাকছে কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে কি-না তা দেখার জন্য।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরুতে ও বর্তমানে এখন যে মাস্ক নিয়ে কথা বলছি তাতে কিছু গুণগত পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ বিগত সময়গুলোতে নানা বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, কেবলমাত্র মাস্কই করোনা ভ্যাকসিনের বিকল্প হতে পারে। আমরা জানি, করোনা রোগীর একটা বিশাল অংশ উপসর্গহীন। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৫০ শতাংশের অধিক মানুষ উপসর্গহীন থাকছে। এক্ষেত্রে সবাই যদি মাস্ক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তবে সুস্থ থাকা সম্ভব। এ কারণেই বলা হচ্ছে, করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত নিরাপদে থাকার জন্য মাস্ক পরতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এটি যেহেতু বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাই আমরা এর ওপরেই ভরসা রাখব।’

তিনি বলেন, ‘যারা সামর্থ্য এবং সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও মাস্ক পরছে না তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে এখন যে পরিমাণ জরিমানা করা হচ্ছে তা ধীরে ধীরে বাড়ানো উচিত। দিল্লিতে এক সময় ৫০০ রুপি জরিমানা ছিল আর এখন ২ হাজার রুপি করা হয়েছে। যারা মাস্ক পরতে অনুৎসাহিত করবে তাদেরকেও শাস্তির আওতায় আনা উচিত। দরিদ্রদের বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়ার জন্য কর্মসূচি নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে যারা নেতৃত্ব দিবেন তাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ: ভ্যাকসিনের বিকল্প টপ নিউজ দরিদ্র বিনামূল্যে মাস্ক কর্মসূচি সারাবাংলা ফোকাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর