Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিরল চর্মরোগ নিয়ে নবজাতক ভূমিষ্ট!


২২ নভেম্বর ২০২০ ২০:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিরল চর্মরোগ নিয়ে চট্টগ্রামে এক ছেলে শিশুর জন্ম হয়েছে। নবজাতকটির সারা শরীর প্লাস্টিকের মতো পুরু চামড়া দিয়ে ঢাকা। ত্বকের ওপর রয়েছে বাদামি আবরণের ওপর লাল ডোরাকাটা দাগ।

শনিবার (২১ নভেম্বর) রাতে নগরীর নাজিরপোলে একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিশুটির জন্ম হয়। নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী এক গৃহবধূ নবজাতকটির মা। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। অস্ত্রোপচার করেছেন প্রসূতিবিদ্যায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ইশরাত জাহান।

জন্মের পর পরই শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবজাতকটি ৩৮ সপ্তাহে জন্ম নিয়েছে। এটি ওই গৃহবধূর প্রথম সন্তান।

চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান অধ্যাপক জগদীশ দাশ জানান, নবজাতকটির শরীরে ত্রুটি মারাত্মক। একই ধরনের ত্রুটি নিয়ে এর আগেও নবজাতককে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের শিশুর চর্মরোগের সমস্যা ছাড়াও হাত-পায়ের পেশী দুর্বল হয়। তারা হাত-পা নাড়াতে পারে কম। ভর্তি হওয়া নবজাতকেরও একই সমস্যা আছে।

চমেক হাসপাতালের শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক প্রণব কুমার চৌধুরীও শিশুটিকে দেখে এসেছেন। প্রণব কুমার চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি একটি কলোডিয়ান বেবি। হারলিকুইন ইকথাইয়োসিস নামে এক ধরনের জন্মগত চর্মরোগ আছে, যেগুলো জিনগত ত্রুটির কারণে হয়। সাধারণত কয়েক লাখ নবজাতকের মধ্যে একজন এ ধরনের রোগে আক্রান্ত অবস্থায় জন্ম নেয়। বাবা অথবা মায়ের বংশগত কোনো ত্রুটি থেকে নবজাতক এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগে শিশুর চেহারাটা অদ্ভূত হয়। চোখ এবং ঠোঁট রক্তবর্ণ হয়। ত্বকের সমস্যা থাকে। ত্বক খসে পড়ে না। চামড়াগুলো মোটা ও পুরু হয়, খসখসে থাকে। একটি শিশুকে পুরু প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে যে অবস্থা হয়, সাধারণ কলোডিয়ান বেবি সেরকম।’

তিনি আরও জানান, কলোডিয়ান বেবিদের ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ জটিলতা থাকে। পানিশূন্যতাও থাকে। মুখ খুলতে পারে না। এজন্য স্বাভাবিকভাবে তারা খাবারও গ্রহণ করতে পারে না। জন্মের পর মাত্র ১৫ শতাংশ কলোডিয়ান বেবি বেঁচে থাকে। যদি শরীরে জটিলতা মারাত্মক আকারের হয়, তাহলে এ ধরনের শিশু জন্মের প্রথম সপ্তাহেই মারা যায়।

ওই দম্পতির দ্বিতীয় সন্তানও একই জিনগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেবে কি না তা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রসবের আগেই নিরূপণ সম্ভব বলে জানান এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘গর্ভকালীন ১৭ থেকে ২১ সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষার মাধ্যমে জানা সম্ভব। তবে দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার আগে বাবা–মায়ের জেনেটিক কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন আছে।’

কলোডিয়ান চর্মরোগ টপ নিউজ বিরল শিশুর জন্ম হারলিকুইন ইকথাইয়োসিস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর