গণফোরামের নেতৃত্বে ঐক্যমঞ্চ নয়, হচ্ছে জাতীয় ঐক্য
২২ নভেম্বর ২০২০ ২৩:১৯
ঢাকা: গণফোরামের নেতৃত্বে ঐক্যমঞ্চ নয়, হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এই নাম ঠিক করা হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এই জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলসহ সাংস্কৃতিক-সামজিক সংগঠন ও ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা হবে জাতীয় ঐক্য।
তবে এই ঐক্যে বিএনপি রাখার বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এমনকি গণফোরামের নিজেদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর গণফোরামের কাউন্সিলে সকলের মতামতের ভিত্তিতে বিএনপিকে জাতীয় ঐক্যে নেওয়া হবে কি হবে না- সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এদিকে জাতীয় ঐক্যে ড. কামাল হোসেনকে একটি সম্মানের জায়গায় রাখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিএনপিকে জাতীয় ঐক্যে রাখার বিষয়ে দেশের ছোট-বড় প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের নেতারা দ্বিমত পোষণ করেছেন। তারা জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোক্তাদের বলেছেন, ক্ষমতার জন্য বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করে সরকার গঠন করেছে। তারা ওই সময় রাজাকারদের মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছে। ফলে বিএনপিকে বাদ দিয়ে জাতীয় ঐক্য হলে সেখানে তারা থাকবে। বিষয়টি নিয়ে গণফোরামের অনেকেই নাম গোপন রাখার শর্তে বলেছেন, বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে গত জাতীয় নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট করা হয়েছিল। সেখানে জামায়াতের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পৌঁছতে পারেনি। যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এখন আর কোনো তৎপরতা নেই।
এসব বিষয় নিয়ে গণফোরামের নেতা সাবেক এমপি মোস্তফা মহাসিন মন্টু বলেন, ‘আমরা ঐক্যমঞ্চ থেকে সরে গিয়ে জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে টেলিফোনে দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রমনা রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে এ সর্ম্পকে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে সরাসরি বৈঠক করা এবং গণফোরামের সাংগঠনিক সফরগুলো স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে জাতীয় ঐক্য গঠনের বিষয়ে বৈঠক করা হবে। বর্তমানে র্ভাচুয়াল ও টেলিফোনে আলোচনা হচ্ছে।’
মন্টু বলেন, ‘আসছে শীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে গেলে গণফোরামের কাউন্সিল পেছাতে পারে। আর যদি সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তাহলে ২৬ ডিসেম্বর গণফোরামের কাউন্সল অনুষ্ঠিত হবে। ওই কাউন্সিলে জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে যাওয়া দল ও সংগঠনের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সেখান থেকেই জাতীয় ঐক্যের ঘোষণা আসতে পারে। যদিও বিষয়টি এখনও ঠিক হয়নি। কারণ গণফোরামের অভ্যন্তরীণ ঝামেলা এখনও মেটেনি।’
প্রসঙ্গত, দলটির প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। বর্তমানে গণফোরামের একাংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুসহ তিন নেতা। অন্যদিকে রয়েছেন ড. রেজা কিবরিয়া। তবে দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন এক্ষেত্রে চুপচাপ রয়েছেন।
এদিকে গত সপ্তাহে ড. রেজা কিবরিয়া এক বিবৃতিতে ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য গণফোরামের তার অংশের কাউন্সিল স্থগিত করেন। এর মধ্য দিয়ে দ্বিধাবিভক্ত গণফোরামের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। গত বৃহস্পতিবার গণফোরামের দুই অংশের এক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনো এক কারণে সেটা হয়নি। তবে সূত্র জানিয়েছে, দ্বিধাবিভক্ত গণফোরাম ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পথে। যেকোনো সময় দলটির ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা আসতে পারে।
ঐক্যমঞ্চ কাউন্সিল গণফোরাম জাতীয় ঐক্য ড. কামলা হোসেন দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি