ঘরে ঘরে নিরাপদ কৃষিপণ্য পৌঁছে দেবে কৃষকের ‘ফেরিওয়ালা’
২৪ নভেম্বর ২০২০ ১৪:৩৪
ঢাকা: সর্বাধিক পুষ্টিমান অক্ষুন্ন রেখে কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ন্যায্য মূল্যে ক্রেতার ঘরে পৌঁছে দেবে ‘ফেরিওয়ালা’। কৃষিতে মধ্যস্থতাকারীর সংখ্যা কমিয়ে কৃষক ও গ্রাহক উভয়কে লাভবান করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আ ফ ম জামাল উদ্দীন ও তার সহযোগী নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মো. জুবায়ের আহমেদের যৌথ উদ্যোগের ফল এই ‘ফেরিওয়ালা’। এই উদ্যোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে অনলাইনভিত্তিক না হলেও দ্রুত অনলাইন ও অ্যাপভিত্তিক সেবা চালু করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
দেশের বিভিন্ন সুপার শপের কৃষিপণ্য থেকেও ফেরিওয়ালার পণ্যের মান অপেক্ষাকৃত ভালো জানিয়ে অধ্যাপক আ ফ ম জামাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত কৃষকের কাছে থেকেই শুধু পণ্য নিই। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা কীটনাশক ও পচনরোধী রাসায়নিক যেন ব্যবহার করা না হয় সেই বিষয়টি খেয়াল রাখি। এছাড়া একটি পণ্য যত দ্রুত সম্ভব গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। এতে ফসলের গুণাগুণ নষ্ট হয় না এবং খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও ঠিক থাকে।’
তিনি আরও বলেন ‘এছাড়াও আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পণ্য নেওয়ায় মধ্যস্থতাকারীর সংখ্যা কমে যায়। ফলে কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে পারি। পাশাপাশি ভোক্তাও অপেক্ষাকৃত কম দামে পণ্য পেয়ে থাকেন। এখানে কৃষক ও ক্রেতা উভয়ই লাভবান হতে পারবেন। সেটা আর্থিক ও পুষ্টিমান উভয়দিক থেকেই। যা সাধারণত সুপার শপের ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না।’
শহরাঞ্চলের উপযোগিতার প্রশ্নে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘শহরের মানুষ সচেতন হওয়ায় এখন ছাদ বাগানের দিকে ঝুঁকছে। এখন সখে তৈরি ছাদবাগানের সঙ্গে যদি অর্থনৈতিক বিষয়টি যোগ করতে পারি তবে শহরের প্রয়োজনের কিছু অংশ আমরা শহর থেকেই মেটাতে পারব। একজন ছাদবাগানের মালিক যদি সবজি চাষ করেন তবে পরিবারের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য তিনি আমাদের কাছে বিক্রি করে দিতে পারেন। এতে প্রয়োজন মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা স্বাবলম্বীও হতে পারবেন তারা।’
এখনও অনলাইনভিত্তিক না হলেও দ্রতই অনলাইন ও অ্যাপভিত্তিক সেবা চালু করবে ‘ফেরিওয়ালা’। যার মাধ্যমে থেকে একজন ক্রেতা তার কেনা পণ্যের উৎপাদনকারীর তথ্যসহ পণ্যটি কখন-কীভাবে চাষ করা হয়েছে তা জানতে পারবেন। পণ্যের ট্রেসাবিলিটি নিশ্চিতে ‘ফেরিওয়ালা’ সাধারণের ভেতরে দ্রুত সময়ে জনপ্রিয়তা পাবেন বলে ধারণা এই বিজ্ঞানীর।
একজন শিক্ষকের পাশাপাশি উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “শিক্ষকরা শুধু বলেন, কিছু করতে পারেন না’- এই কথাটি পরিবর্তনের জন্যই আমি শিক্ষক হয়ে কিছু করে দেখানোর চেষ্টা করছি। ‘ফেরিওয়ালা’র স্বপ্ন আজ থেকে তিন বছর আগে দেখলেও বিভিন্ন প্রতিকূলতা কাটিয়ে এখন আমরা সাফল্যের দিকে। আশা করছি, আমাদের সব সহযোগী উপকরণসহ দ্রুতই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে এবং মানুষ তা সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ আমরা নিশ্চিত করছি, সবার জন্য ন্যায্য দামে নিরাপদ খাদ্য।”