বিএনপি স্কুলের দফতরিকে হেডমাস্টার বানাতে চেয়েছিল: তথ্যমন্ত্রী
২৫ নভেম্বর ২০২০ ২১:০১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যখন সরকারের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলে তখন হাসি পায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সরকারকে টেনে নামাতে গিয়ে বিএনপি নিজেই রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয়ন পরিষদের আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভা হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব যখন বলেন স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতির কথা, তখন হাসি পায়। যারা ইতিহাসকে বছরের পর বছর, দশকের পর দশক ধরে বিকৃত করেছেন তাদের মুখে এসব শোভা পায়না। আজ দেশের মানুষ সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে, সেজন্য তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। তারা ইতিহাসের খলনায়ককে নায়ক বানিয়েছিলেন, স্কুলের দফতরিকে হেডমাস্টার বানানোর চেষ্টা করেছিলেন। এ ধরনের হাস্যকর বক্তব্য ক্রমাগতভাবে না দিয়ে বরং নিজেদের দল গোছানো উচিৎ বিএনপির।’
সরকারকে টেনে নামানোর হুমকির জবাবে তিনি বলেন, ‘উনাদের (বিএনপি) টেনে নামানোর হুমকির মধ্যে প্রায় একযুগ ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার মাসখানেক পর থেকেই তারা আমাদের টেনে নামানোষ্টা করে যাচ্ছেন। সরকারকে টেনে নামাতে গিয়ে রশি ছিঁড়ে নিচে পড়ে গেছে বিএনপি।’
‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এই সরকার কখনো পদ্মা সেতু করতে পারবেনা। তাদের বলবো, পদ্মাপাড়ে গিয়ে দেখে আসুন। ঢাকা শহরে মেট্রোরেল ও চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেল আগামী বছর চালু হবে। ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সাল নয়, তার অনেক আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হবে। সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়ার মতো বদলে যাওয়ার গল্প যদি বিশ্ববাসীকে জানান দিতে হয়, শেখ হাসিনাকে একটু সময় দিতে হবে। তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’ বলেন হাছান মাহমুদ
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর, পাকিস্তানের ৭০ বছর। বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলার, পাকিস্তানের আমাদের তিনভাগের এক ভাগ। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার, পাকিস্তানের ১ হাজার ৮’শ ডলারের নিচে। শুধু পাকিস্তানকে নয়, সামাজিক ও মানব উন্নয়ন সুচকে আমরা ভারতকে অতিক্রম করেছি অনেক আগে। এই করোনাকালে যেখানে পৃথিবীর মাত্র ২২টি দেশ পজিটিভ ইকোনোমিক জিডিপি গ্রোথ রাখতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভারত-পাকিস্তানের গণমাধ্যমে ঝড় উঠছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে। কিন্তু একটি পক্ষ প্রশংসা করতে পারে না। বিএনপি আর তার দোসরেরা দেখেও দেখেনা, শোনেও শোনেনা। চোখ থাকিতে অন্ধ, কান থাকিতে বধির।’
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবি সমন্বয় পরিষদ, চট্টগ্রামের সভাপতি সৈয়দ মোক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মেজবাহ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস।
অনলাইনে যুক্ত হয়ে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও আবদুল বাসেত মজুমদার। এছাড়া আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম রেজাউল করিম চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ্য আইনজীবী ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, রতন কুমার রায়, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, আবু মো. হাশেম বক্তব্য রাখেন।