Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শর্টসার্কিটে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ড, সরঞ্জামের মান যাচাইয়ে হচ্ছে ল্যাব


২৬ নভেম্বর ২০২০ ১০:২৭

ঢাকা: বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, গ্যাস বিস্ফোরণ, দাহ্য পদার্থ ও রান্নাঘরের আগুনসহ অসাবধানতায় প্রতিদিনই ঘটছে বড়ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনা। আর এই দুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলছে। এতে অসংখ্য হতাহতের পাশাপাশি বাড়ছে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারাদেশে শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই ২৪ হাজার ৭৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কেবল বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণেই ঘটেছে ৮ হাজার ৬৪৪টি, যা মোট অগ্নিকাণ্ডের ৩৯ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর পেছনে অন্যতম কারণ, দেশে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের শুদ্ধতা নিশ্চিতে নেই কোনো ব্যবস্থা। ফলে পণ্যের গায়ে লেখা ভোল্টেজ লেভেলের ওপরই নির্ভর করে চলতে হচ্ছে সবাইকে। বৈদ্যুতিক এই সরঞ্জামগুলোর অধিকাংশেরই ভোল্টেজের মাত্রা ঠিক নেই। এমন পরিস্থিতিতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের শুদ্ধতা নিশ্চিতে একটি হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার।

জানা গেছে, বিদ্যুতের হাইভোল্টেজের যন্ত্রাংশ পরীক্ষায় সরকারি কোনো ব্যবস্থা নেই। সাধারণত বেসরকারি কোম্পানিগুলো নিজ উদ্যোগে এই ধরনের যন্ত্রাংশ পরীক্ষা করে থাকে। অন্যদিকে স্বল্প পরিসরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কিছু সরঞ্জাম পরীক্ষা করে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। বিদেশি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে যন্ত্রাংশ পাঠায়, সেভাবেই স্থাপন করা হয়। বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন, হাইভোল্টেজের বেশিরভাগ যন্ত্রাংশ কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শুধুমাত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করেই স্থাপন করা হয়।

তবে এবার দুর্ঘটনা এড়ানোর পাশাপাশি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের শুদ্ধতা নিশ্চিতে সরকার হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিদ্যুৎ আইনের গেজেটে এই ল্যাব প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। আইনের ৬২ ধারায় ল্যাব স্থাপনের কথা রয়েছে। যেখানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের উৎপাদিত ট্রান্সফরমার এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলো পরীক্ষা করিয়ে সার্টিফিকেট নেবে। তবে এসবের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থও পরিশোধ করতে হবে তাদের।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে দেশে ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছে সরকার। চলতি বছরেই শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। রয়েছে ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনাও। বিদ্যুতের এই উন্নয়নে একটি ল্যাবরেটরি স্থাপন জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রসারিত হয়েছে। এরই মধ্যে ৯৮ শতাংশ বিদ্যুতায়ন সম্ভব হয়েছে। চলতি বছর অর্থাৎ মুজিববর্ষেই শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। পাশাপাশি আইন অনুযায়ী একটি বিশ্বমানের হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পাওয়ার সেলের অধীনে এটি স্বাধীন সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’

জানা যায়, অনেকদিন ধরেই বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশে স্টার লেবেলিংয়ের চিন্তা করছে সরকার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ছোট আকারের যন্ত্রাংশেও স্টার লেবেলিং থাকতে হবে। একটি যন্ত্র কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী তার ওপর নির্ভর করে লেবেলিং করা হবে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই স্টার লেবেলিং ব্যপক হারে চালু করতে যাচ্ছে সরকার। তবে ব্যক্তিগত ব্যবহারের সঙ্গে এবার হাইভোল্টেজ টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের বিষয়টি যোগ করায় বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশে আরও শুদ্ধতা আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অগ্নিকাণ্ড আগুন বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম মান যাচাই ল্যাব শর্টসার্কিট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর