বিদেশি নোট দেখিয়ে প্রতারণা, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা
২৬ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিদেশি নোট বিক্রির কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেফতার দু’জনের মধ্যে একজন অটোরিকশা চালক; যাকে প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) নগরীর কাজীর দেউড়ির মোড়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পেয়ে রাতভর অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা।
গ্রেফতার দু’জন হলেন- অটোরিকশা চালক মো. জাহান হোসেন সুমন (২৮) এবং চক্রের আরেক সদস্য জয়নাল আবেদীন (৩৪)।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর এনায়েত বাজারে এবি ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার টাকা তুলে জনৈক জুযার মোহাম্মদ হোসাইন কাজীর দেউড়ি খোয়াজা হোটেলের সামনে যান। সেখানে অটোরিকশা চালক সুমন তাকে প্রথমে কোথায় যাবেন ও অটোরিকশা লাগবে কিনা- জিজ্ঞেস করেন। এরপরই সুমন তাকে কয়েকটি বিদেশি নোট দেখিয়ে সেগুলো কোথায় গেলে বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করা যাবে জানতে চান।
তবে মোহাম্মদ হোসাইন জবাব দেওয়ার আগেই সেখানে তিনজন লোক এসে হাজির হন। তাদের একজন নোটগুলো দেখে প্রতিটির দাম ২২ হাজার টাকা হবে বলে চালক সুমনকে জানান। সুমন প্রতিটি ১৫ হাজার টাকা করে ২টি নোট ওই তিনজনের কাছে বিক্রি করেন।
ওসি মহসীন বলেন, ‘দুটি নোট কেনাবেচাটা ছিল পুরোটাই নাটক। এভাবে মোহাম্মদ হোসাইনের কাছে বিশ্বাস স্থাপন করে চালক সুমন তার কাছে ৬০ হাজার টাকায় আরও চারটি নোট বিক্রি করেন। কিন্তু বাসায় যাওয়ার পর তার ছেলে যাচাইবাছাই করে দেখেন সেগুলো প্রতিটি ওমানের এক টাকার মুদ্রা, যার মান বাংলাদেশি টাকায় বরং ২২ টাকা। তিনি আবার কাজীর দেউড়ির মোড়ে আসেন এবং কর্তব্যরত এসআই ধর্মেন্দু দাশকে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করি। সেই ফুটেজ থেকে অটোরিকশা ও চালককে শনাক্ত করি। তাকে স্টেশন রোড থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে হালিশহর থেকে জয়নালকে গ্রেফতার করি। তার ঘরে পুরনো একটি চায়ের ফ্লাস্কের ভেতর থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করি’, বলেন ওসি মহসীন।
সহকারী পুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেফতারের পর চালক সুমন তাদের চক্রের আরও তিনজনের কথা জানান। এদের মধ্যে জয়নালকে আমরা গ্রেফতার করেছি। রানা ও হালিম নামে আরও দুই জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। তবে চালক সুমন হচ্ছে মূল হোতা। এরা নিরীহ লোকজনকে বিদেশি মুদ্রা দেখিয়ে প্রতারণার জাল পাতে। লোভের বশবর্তী হয়ে কেউ যদি সেই নোট কিনে ফেলে, এরপর দ্রুত তারা সেই স্থান ত্যাগ করে। আমরা প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশাটিও জব্দ করেছি।’
প্রতারণার শিকার মোহাম্মদ হোসাইন বাদি হয়ে নগরীর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও পুলিশ জানিয়েছে।