ভারতজুড়ে ধর্মঘট, কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি
২৬ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৪৩
ভারতের কেন্দ্র সরকারের পাস করা ‘দেশবিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে এবং মহামারির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদাণসহ সাত দফা দাবিতে দেশজুড়ে ধর্মঘট পালন করছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (আইএনসি), বামফ্রন্ট এবং কৃষক-শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন। খবর পিটিআই।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গের বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, অধিকাংশ এলাকায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন দেখা গেলেও মেট্রো চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বেশিরভাগ কলকারখানা বন্ধ রয়েছে। যে কারাখানাগুলো খোলা রয়েছে সেগুলোতে শ্রমিক উপস্থিতি অন্যদিনের তুলনায় কম।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস কিছু এলাকায় ধর্মঘটবিরোধী মিছিল করেছে। তবে, কোথাও থেকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া বা সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেবল কলকাতাতেই পুলিশের পাঁচ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।
অন্যদিকে, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টিও (বিজেপি) ধর্মঘট প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। ভারতের অন্যান্য রাজ্যে ধর্মঘটের কারণে যানবাহন চলাচল সামান্য বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা পিটিআই।
অপরদিকে, ভারতের কৃষক সংগঠনগুলো এ ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বন্ধ, অবরোধ ও বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ডাকে সাড়া দিয়ে এরই মধ্যে হাজার হাজার কৃষক পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থান থেকে রাজধানী দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় হরিয়ানায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার পাঞ্জাবের সঙ্গে তাদের সীমান্ত সিল করে দিয়েছে। এ রাজ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) পুলিশ কৃষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পাশাপাশি জলকামানও ব্যবহার করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
পাশাপাশি, আম্বালা-কুরুক্ষেত্র-হিসারে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। বিভিন্ন এলাকায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। গুরগাঁওয়ে কৃষক নেতাদের সঙ্গে স্বরাজ ইন্ডিয়ার সভাপতি যোগেন্দ্র যাদবকেও আটক করেছে পুলিশ।
এছাড়াও, পাঞ্জাব থেকে দিল্লি অভিমুখে রওনা দেওয়া লাখো কৃষকদের প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদেরকে যেখানে আটকানো হবে সেখানেই বসে পড়বেন তারা।
কিন্তু, করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে দিল্লিতে কোনো ধরনের সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে দিল্লি কর্তৃপক্ষ। কৃষকদের সমাবেশের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে তারা। ধর্মঘট মোকাবিলায় উড়িষ্যায় জারি হয়েছে এসেনসিয়াল সার্ভিস মেইনটেনেন্স অ্যাক্ট (এসমা)। এ আইনের অধীনে নির্দিষ্ট কিছু খাতের শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার রহিত করা হয়। রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থাও ধর্মঘটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (আইএনসি) কৃষক সংগঠন দিল্লি চলো বামফ্রন্ট ভারত