Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১১শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে তথ্য কমপ্লেক্স হচ্ছে ১৯ জেলায়


২৭ নভেম্বর ২০২০ ০৮:০২

ঢাকা: প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের ১৯ জেলায় তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ‘জেলা পর্যায়ে আধুনিক তথ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্পটি হাতে নিচ্ছে তথ্য মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়িত হলে একটি নির্ভরযোগ্য ব্যয় সাশ্রয়ী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জেলা তথ্য অফিসের সেবা দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ানো যাবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানান, প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়াকরণ শেষ করে আগামী মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গণযোগাযোগ অধিদফতর (ডিএমসি)।

যেসব জেলায় তথ্য কমপ্লেক্স হচ্ছে সেগুলো হলো- গোপালগঞ্জ, মাগুরা, বান্দরবান, নোয়াখালী, পঞ্চগড়, পাবনা, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, দিনাজপুর, বাগেরহাট, কুমিল্লা, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর এবং টাঙ্গাইল জেলা।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রম হচ্ছে- অফিস ভবন নির্মাণ ও পূর্ত কাজ, ভবন ও অবকাঠামো, ইন্টেরিয়র এক্যুস্টিক ও এক্যুস্টিক কার্পেট পর্দা, বাউন্ডারি ওয়াল, রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ, পানি সরবরাহ, বিতরণ, ডিপ টিউবওয়েল, বিদ্যুতায়ন ও ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যাল, সাবস্টেশন ইক্যুইপমেন্ট, জেনারেটর, লিফট, ডিবি, এমডিবি, লাইটিং, ফায়ার প্রটেকশন অ্যান্ড ডিটেকশন, সিসিটিভি, সোলার, সিকিউরিটি লাইট, ইন্টারকম, কনফারেন্স সিস্টেম এবং সাউন্ড সিস্টেম ক্রয়।

প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ডিজিটাল মাল্টিপারপাস সিনেমা হলে জনগণের মধ্যে সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র দেখার অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়ন সাধন করা হবে। এছাড়া সর্বস্তরের জনগণের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ ও উজ্জীবিত করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। পাশাপাশি উন্নয়ন কার্যক্রমে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। তথ্য কমপ্লেক্সগুলোকে পরামর্শ কেন্দ্রে পরিণত করে সর্বস্তরের জনগণ, সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যম, স্থানীয় প্রেসক্লাব, কমিউনিটি রেডিও, পর্যটন করপোরেশন ও প্রবাসী কল্যাণের জন্য পরস্পরের মাঝে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র, রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্পর্কিত তথ্যাবলী সংরক্ষণের জন্য ডিজিটাল লাইব্রেরি, ডিজিটাল আর্কাইভ ইত্যাদিও নির্মাণ করা হবে।

বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা যেমন ভিশন ২০২১, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি), সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রভৃতি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গণযোগাযোগ অধিদফতরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ডিজিটাল ধারণা এবং আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত জেলা তথ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস সংকুলানসহ গণমাধ্যমকর্মী ও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। ফলে উন্নয়ন প্রচারে আরও গতি আসবে। তথ্য কমপ্লেক্স একটি উন্নয়ন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে। এসব কমপ্লেক্স ভবনে অবস্থিত সিনেপ্লেক্স বাংলাদেশের অভ্যুদয়, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি, বর্তমান সরকারের উন্নযন কার্যক্রমবিষয়ক চলচ্চিত্র ও ডকুমেন্টারি, শিশু-কিশোরদের উপযোগী চলচ্চিত্র বিনামুল্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রদর্শন করা হবে। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।’

প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সরকারের উন্নয়ন ও জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড প্রচার এবং দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এক্ষেত্রে ৬৪টি জেলা তথ্য অফিস এবং চারটি উপজেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সরকারের নীতি ও উন্নয়ন কর্মকৌশল আন্তঃব্যক্তিক (আইপিসি) যোগাযোগের মাধ্যমে সর্বস্তরের জনগণের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছে। জেলা তথ্য অফিসগুলো জনগণের প্রতিক্রিয়া যথাযথ মাধ্যমে সরকারকে জানাচ্ছে এবং সরকার গণমাধ্যমকর্মী ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করছে।

প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়েছে, জেলা তথ্য অফিসগুলোর পিএই ইউনিট, মোবাইল সিনেমা ইউনিট, লোকজ সঙ্গীত ইউনিটসহ প্রচার কাজ বাস্তবায়নে দক্ষ জনবল রয়েছে। কিন্তু অফিসগুলোর নিজস্ব কোন স্থায়ী কার্যালয় নেই। অন্যদিকে বিভাগীয় পর্যায়ের বিভাগীয় তথ্য অফিস এবং তথ্য অধিদফতরের নিজস্ব কোনো কার্যালয় নেই। তাছাড়া জেলা পর্যায়ে সিনেমা হলগুলো বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই পটভূমিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্বলিত জেলা তথ্য কমপ্লেক্স তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

একনেক গণযোগাযোগ অধিদফতর তথ্য কমপ্লেক্স তথ্য মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর