পৃথিবীর সব সুখ ফিনল্যান্ডে
১৫ মার্চ ২০১৮ ১১:৪১
।।সারাবাংলা ডেস্ক।।
নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস,
ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস।
রবীন্দ্রনাথের নদীর মতো শুধু আফসোস আর আক্ষেপ নয়, জাতিসংঘ রীতিমতো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণা করে দেখেছে ২০১৮ সালে পৃথিবীর সকল সুখ ফিনল্যান্ড নামের দেশটিতে।
নরডিক এই দেশটিতে প্রায় বারো মাসই শীত। আমাদের মতো গরম দেশের মানুষদের পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন যে ঐ দেশে কোনো সুখ থাকতেও পারে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের এর নিচে নামলেই আমাদের দেশসুদ্ধ মানুষের কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে যায় সেখানে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেলে তো ফিনল্যান্ডের মানুষ খুশিতে বাক বাকুম হয়ে বলবে, হোয়াট আ ব্রাইট সানি ডে!
তাহলে কি এই অল্পতে তুষ্ট হওয়ার স্বভাবই দেশটিকে পৃথিবীর সুখীতম দেশ করে দিয়েছে? আমাদের অবিশ্বাসী মন এমন অনেক কিছুই ভাবতে পারে, তবে আসল ঘটনা হচ্ছে জাতিসংঘ ১৫৬ দেশের মধ্যে জরিপ চালিয়েছিল যেখানে গড় আয়ু, সামাজিক সহযোগিতা, দুর্নীতি এ তিন সূচকে মাপা হয়েছে কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে সুখী। এই সূচকে জানা গিয়েছে ফিনল্যান্ড খুব খুব সুখী একটা দেশ। কারণ এই তিন সূচকে তারা এগিয়ে আছে অনেক পথ।
আমাদের সাধারণ একটা ধারণা আছে খুব শীতল আবহাওয়া, অন্ধকার ইত্যাদি মনের উপরে খুব চাপ ফেলে, এগুলোই আসলে বিষণ্ণতার কারণ। কিন্তু ফিনল্যান্ড একদম মেরু অঞ্চলে অবস্থিত হুয়ার কারণে সূর্যের আলো তারা কমই সময় পেয়ে থাকে। তারপরও তারা সুখে আছে, কারণ তাদের জীবনে উটকো উপদ্রোপ কম।
এই তালিকায় বাংলাদেশ আছে ১১৫ তম স্থানে। তবে এটার চেয়েও বেশি খারাপ খবর হচ্ছে, গবেষণায় ২০০৮-২০১০ সময়টিকে ভিত্তি ধরে ২০১৫-২০১৭তে এই দেশগুলোর মানুষদের সুখ পরিমাণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের সুখ কমেছে, ৪.৯৭ ইউনিট। ১০ স্কেলে মাপা এই পরিবর্তন নেহায়েত কম নয়।
গড় আয়ু, সামাজিক সহায়তা ও দুর্নীতিকে সূচক ধরলে বাংলাদেশ একটি অন্যতম দুখী দেশ। বাংলাদেশের আরও সঙ্গী সাথী দুঃখী দেশ হচ্ছে, তিউনিসিয়া, আফগানিস্তান।
আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত অবশ্য এই গবেষণা অনুযায়ী আমাদের চেয়েও দুঃখী। তালিকায় তাদের স্থান ১৩৩ তম। আর ২০০৮-২০১০কে ভিত্তি ধরলে ২০১৫-২০১৭তে তাদের সুখও কমেছে ৬.৯৮ মাত্রার।
এই গবেষণা বলে, শুধু অর্থনৈতিক উন্নয়নই সব নয়, সুখী হতে হলে লাগে আয়, স্বাধীনতা, বিশ্বাস, সুস্থ জীবন প্রত্যাশা, সামাজিক সমর্থন এবং উদারতার মতো বিষয়গুলোও। সেগুলোকে বাদ দিয়ে সুখ অনুভব করা যায় না।
সারাবাংলা/এমএ