‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গ্রাম আদালতকে কার্যকর করার বিকল্প নেই’

ঢাকা: দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে গ্রাম আদালতকে কার্যকর ও শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘গ্রাম আদালতকে শক্তিশালী করতে পারলে জেলা পর্যায়ের আদালতসমূহে মামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।’

রোববার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপির সহায়তায় স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত গ্রাম আদালতের আইনগত কাঠামো সংস্কার বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ে পরামর্শ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে অনেক ছোট ছোট এবং খুব সামান্য বিষয় নিয়ে মানুষ নানারকম বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। স্থানীয়ভাবে এসব বিবাদ মীমাংসা করতে না পারায় তারা কোর্টে চলে যান। এতে একদিকে যেমন আদালতে মামলার জট তৈরি হয়, অন্যদিকে ভুক্তভোগীদের সময় ও অর্থের অপচয় হওয়ার পাশাপাশি তাদের রায় পেতে অনেক দেরি হয়। এছাড়া এক ধরনের অসাধু ব্যক্তি বিবাদ মীমাংসা করে দেওয়ার নামে উভয় পক্ষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আদায় করেন।’

গ্রামীণ মানুষের মধ্যে দ্রুত ন্যায় নিশ্চিত করায় বর্তমানে গ্রাম আদালতের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রাম আদালত পরিচালন প্রক্রিয়া সহজতর করতে এর আইনকে আরও যুগোপযোগী করতে হবে। আজকের এই অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে গ্রাম আদালতের আইনি কাঠামো সংশোধনের যেসব প্রস্তাবনা আসবে সেগুলোকে সন্নিবেশিত করে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিয়ে আইন তৈরি করলে গ্রামপর্যায়ে স্থানীয় বিচার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হবে।’

প্রধান অতিথি এসময় গ্রাম আদালত সক্রিয় করার কার্যক্রম পরিচালনায় একদশক জুড়ে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সরকারের পাশে থাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইউএনডিপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি’র সব টার্গেট পূরণ করতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শহর এবং গ্রামের মানুষের মধ্যে বৈষম্য নিরসনে সরকার কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।’

ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিংক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে- বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মরণ কুমার চক্রবর্তী, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, প্রকল্প এলাকা হতে আসা জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন।

আইনের শাসন গ্রাম আদালত তাজুল ইসলাম পল্লী উন্নয়ন সমবায়মন্ত্রী