অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়েও শিশু হত্যা, ৩ আসামির যাবজ্জীবন
২৯ নভেম্বর ২০২০ ১৮:২২
বাগেরহাট: জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের ৩ মাসের শিশু আব্দুল্লাহকে অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়েও হত্যার ঘটনায় ৩ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা জজ মো. নূরে আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদার (২১), মো. মহিউদ্দিন হাওলাদার (২২), মো. ফায়জুল ইসলাম (২৮) আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলো। তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার গুলিশাখালী গ্রামে। রায়ে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডেরও আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ১১ মার্চ রাতে শিশু আব্দুল্লাহকে আসামিরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওইদিনই অপহৃত শিশুটির বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত অপহরণকারীদের নামে মামলা দায়ের করে। পরে শিশুটির মুক্তির জন্য মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। শিশুকে ফিরে পেতে বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ অপহরণকারীদের চাহিদা মতো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণও পরিশোধ করে।
‘মুক্তিপণ’ দাবিতে করা মোবাইল ফোনটির সূত্র ধরে প্রধান আসামি মো. হৃদয় ওরফে রাহাত হাওলাদারসহ অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার ৭ দিন পর প্রধান আসামি মো. হৃদয়ের তথ্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিশারীঘাটা গ্রামের কাচারিবাড়ি এলাকার একটি মৎস্য খামারে ভেতর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল মতি দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে পর প্রধান আসামি মো. হৃদয়সহ ৩ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে ৩ ঘাতককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।
মামলার বাদী শিশুটির বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম সোহাগ, মা রেশমা বেগম ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রণজিৎ কুমার মন্ডল রায়ে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. এনামুল হেসেন জানান, তার মক্কেল আদালতে ন্যায়বিচার পায়নি। সে কারণে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।