Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভাসান চরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে রাখা হয়নি’


২ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:০৮

ঢাকা: বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত ভাসান চরে প্রাথমিক স্থানান্তরের কাজ আগামী কিছুদিনের মধ্যে শুরু করার সম্ভাবনাবিষয়ক কিছু প্রতিবেদন সম্পর্কে জাতিসংঘ অবগত রয়েছে। সেই স্থানান্তরের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে অথবা শরণার্থী শনাক্তের প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্যও নেই। জাতিসংঘের ঢাকা অফিস থেকে বুধবার (২ ডিসেম্বর) পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভাসান চরে স্থানান্তরের বিষয়ে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন প্রাসঙ্গিক, নির্ভুল এবং হালনাগাদ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তথ্যসমৃদ্ধ এবং স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ বরাবরই আহ্বান জানিয়ে এসেছে এবং বর্তমান পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘ এই বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করছে। এর আগে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে যে, ওই দ্বীপে শরণার্থী স্থানান্তর স্বেচ্ছা-নির্ভর হবে এবং জাতিসংঘ এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতির প্রতি সন্মান প্রদর্শনের জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানায়, যেসব শরণার্থী ভাসান চরে স্বেচ্ছায় স্থানান্তরিত হতে চাইবেন ওই দ্বীপে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবিকার নিশ্চয়তা এবং সেখান থেকে মূল ভূ-খণ্ডে চলাচলের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার ও সেবা সমূহ নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ গুরুত্বারোপ করেছে। এটি ভাসান চরে একটি কার্যক্ষম ও নিরাপদ জনপদের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ভাসান চর প্রকল্পের ঘোষণার সময় থেকে এই পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘ গঠনমূলক আলোচনার প্রস্তাব রেখেছে এবং সরকারের সাথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি ও পদ্ধতিগত এবং বাস্তবায়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিবেচনা করেছে। এই আলোচনা চালিয়ে যেতে জাতিসংঘ এখনও আগ্রহী।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভাসান চরে যেকোনো স্থানান্তরের আগে সর্বাঙ্গীণ সুরক্ষাবিষয়ক একটি প্রায়োগিক মূল্যায়ন করার জন্য জাতিসংঘ বারবার আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের এই নিরপেক্ষ মূল্যায়নে শরণার্থীদের বাসস্থান হিসেবে ভাসান চরের নিরাপত্তা, প্রায়োগিক সম্ভাব্যতা, স্থায়িত্ব এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা কাঠামো এবং তাদের সহায়তা ও সেবা-গ্রহণের অবকাঠামোর সার্বিক পর্যালোচনা করা হবে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, জাতিসংঘ প্রায়োগিক এবং সুরক্ষাবিষয়ক মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জাতিসংঘ সরকারের ভাসান চর প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত হতে পারবে কি-না সেটা নির্ধারণে এই মূল্যায়নগুলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। যদি তাই হয়, তবে সরকার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিকল্পনা এবং বাজেট প্রস্তুতকরণে আরও কিছু কার্যক্রম প্রয়োজন হবে। এদের সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সেবা কার্যক্রম সম্ভব হয়েছে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘ জানায়, কক্সবাজারে বসবাসরত প্রায় নয় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য কার্যকর ও সুদক্ষ মানবিক সহযোগিতা প্রদান কার্যক্রমে সরকারের নেতৃত্বমূলক ভূমিকাকে সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেইসঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছা-নির্ভর, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসনসহ তাদের স্থায়ী সমাধান নিশ্চিতে জাতিসংঘ কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশের সরকার এবং এদেশের জনগণ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা এবং আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে যে উদারতা এবং মানবিক মূল্যবোধের পরিচয় দিয়েছে সেজন্য জাতিসংঘ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

এছাড়া লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে যে মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে তাতে অংশীদারিত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি অটুট রয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

জাতিসংঘ ভাসান চর রোহিঙ্গা স্থানান্তর সম্পৃক্ত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর