Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিকে’র বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি না হওয়ায় হাইকোর্টের অসন্তোষ


২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:০৩

ঢাকা: সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার ও লোপাটের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে) বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে এখনও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

বিজ্ঞাপন

পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় আদালতের অসন্তোষ প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সারাবাংলা ডটনেটকে বলেন, ‘দুদক চেয়ারম্যানের পক্ষে আজ আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করা হয়েছিল নিম্ন আদালতে। কিন্তু দীর্ঘ আড়াই মাস পর এখনও ওয়ারেন্ট জারি না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।’

আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘সেইসঙ্গে আদালত বলেছেন, দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান সারাবাংলা ডটনেটকে বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টকে বলেছি পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিলাম। সেইসঙ্গে আমরা আদালত জানিয়েছি, বিদেশে পালিয়ে থাকা পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি।’

বিজ্ঞাপন

আদালতের অসন্তোষ প্রকাশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত আড়াই মাসেও পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি না হওয়ায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আমরা আশা করছি তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আজকালের মধ্যেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে।’

গত ১৯ নভেম্বর বিদেশে পালিয়ে থাকা পিকে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং গ্রেফতারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। দুদক চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ ও গোয়েন্দা বিভাগ, এনবিআর চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। দুদক আজ এ বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা আদালতে জমা দেয়।

এর আগে গত ১৮ নভেম্বর একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘পিকে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে এ রুল জারি করেন। পিকে হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুই বিনিয়োগকারীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৯ জানুয়ারি এক আদেশে প্রশান্ত কুমার হালদারসহ সংশ্লিষ্ট ২০ জনের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এর মধ্যে দেশে ফিরতে প্রশান্ত কুমার হালদার এ বিষয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের কাছে একটি চিঠি দেন। এরপর কোম্পানিটি আদালতে আবেদন করে। গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালত বলেছেন, তিনি কখন, কীভাবে আসবেন তা জানাতে। পরে গত ২০ অক্টোবর একটি আবেদন করে কোম্পানিটি। যেখানে নির্বিঘ্নে দেশে আসার কথা বলা হয়েছে এবং সেখানে গত ২৫ অক্টোবরের একটি টিকিটের কপিও সংযুক্ত করা হয়।

গত ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদেশে দেশে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার গ্রেফতার নিশ্চিত করতে বলা হয়। পুলিশের মহাপরিদর্শক, ইমিগ্রেশন অথরিটিরি চিফ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে গত ২৪ অক্টোবর ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডের আইনজীবী জানান, পিকে হালদার ২৫ অক্টোবর দেশে ফিরছেন না।

অসন্তোষ গ্রেফতারি পরোয়ানা পিকে হালদার হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর