জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাণন্বিত হয়ে আতিক হত্যা করেছে: আদালতের পর্যবেক্ষণ
২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:১৯
ঢাকা: ঢাকার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্ল্যাহ চৌধুরী হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। মামলাতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শম্পা নামে এ নারীকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া আতিক উল্যাহকে খুনের পর পেট্রোল দিয়ে লাশ গুমের অভিযোগে এ সাত জনকে সাত বছরের সশ্রম কাারদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাক জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও এক বছরের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আতিক উল্ল্যাহ ছিলেন ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। তিনি তার কর্মকাণ্ডে সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছিলেন। এলাকায় তার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আসামি গুলজার হোসেন মেম্বারসহ অন্যান্যরা পরিকল্পিত ভাবে তাকে হত্যা করেন। পরবর্তীতে তর লাশ পেট্রোল দিয়ে পড়িয়ে ফেলেন। এজন্য আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করে আদালত। আসামিদের এই হীন কর্মকান্ডের কারণে দেশ হারালো একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাকে।
রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, ১৯৭১ সালের দেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন এবং তার বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন। পরবর্তীতে তিনি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করে দেশের সেবায় তিনি নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। পরবর্তীতে তিনি এলাকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটরই আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা সাংবাদিকের জানান, এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলার রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে। আমি মনে করি রাষ্ট্রের যে কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার ও ন্যায়বিচারটা খুব জরুরি ছিল। এলাকায় অধিপত্যে এবং চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আসামিরা তাকে হত্যা করে। এছাড়াও পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানায়সহ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
নিহত আলিক উল্ল্যার ছেলে মামলার বাদী মো. সাইদুর রহমান চৌধুরী ফারুক বলেন, আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি। রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয় সেই দাবি জানাচ্ছি। আমাদের পরিবার পক্ষ থেকে সকল আসামিদের ফাঁসির দাবি করা হয়েছিল। আদালত সাত আসামির ফাঁসির আদেশ দেন৷ রায় পর্যালোচনা শেষে পরবর্তী কার্যক্রমে যাব। আমিও এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রায়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করে, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা বলেছেন।