২ একর জমি দখল করতে চায় সন্ত্রাসীরা, ১০ লাখ টাকা ছিনতাই-হামলা
২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:১৪
গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কুশলা পশ্চিমপাড় গ্রামে এক পরিবারের পৈত্রিক জমি দখল নিয়ে বিরোধের জেরে বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় প্রতিপক্ষরা বাসায় থাকা ১০ লাখ টাকাও ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া মারধর করে ওই পরিবারের পাঁচজনকে আহত করা হয়।
গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে এ হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে কোটালীপাড়া থানায় মামলা করা হয়েছে। ২৯ নভেম্বর দায়ের করা মামলার নম্বর ৯।
হামলার শিকার গোলাম রহমানের ছেলে তুহিন চৌধুরী জানান, তার বাবা গোলাম রহমান ও চাচা তহুরুল ইসলাম বেশ কয়েকবছর আগে মারা গেছেন। তাদের বাবা ও চাচা মারা যাওয়ার পর দুই একর জমি একইগ্রামের আবুল হোসেন চৌধুরী দখল করে নেন। আবুল হোসেন চৌধুরীর দাবি ওই জমি গোলাম রহমান ও তহুরুল তার কাছে বিক্রি করেছেন। মুখে জমি দাবি করছে তারা; কিন্তু তাদের কোনো দলিল কিংবা কাগজপত্র দেখাতে পারেনি জমির মালিক দাবিদার আবুল হোসেন।
তুহিন চৌধুরী বলেন, ‘আমার বাবা ও চাচা যদি জমি বিক্রি করতেন তাহলে তো পরিবার সদস্যদের জানার কথা। কেউ না হোক আমার বৃদ্ধ মায়ের জানার কথা। আমরা নিশ্চিত ওই জমি আমার বাবা কিংবা চাচা বিক্রি করেননি। তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করেছে। আমার মা প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি ও আমার মা হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসাও নিয়েছি।’
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে শাহীন চৌধুরীর বাড়িতে হামলা করে একদল সন্ত্রাসী। যার নেতৃত্বে ছিলেন আবুল হোসেন চৌধুরীর জামাতা মিল্টন চৌধুরী। এ ছাড়া আবুল হোসেন চৌধুরী, তার স্ত্রী রাশিদা বেগম, আবুল হোসেনের ছেলে মামুন চৌধুরী, দীপু চৌধুরী, মেয়ে রেশমা বেগম ও মিল্টন চৌধুরীর ভাই রিপন চৌধুরী এ সময় হামলা-ভাঙচুরে অংশ নেন।
মামলার বাদী তুহিন চৌধুরীর ছোট ভাই শাহীন চৌধুরী বলেন, ‘ওই দুই একর জমি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। আমাদের জমিতে মিল্টন চৌধুরী ও তার শ্বশুর আবুল হোসেন চৌধুরীর নজর পড়েছে। ওই জমিতে লাগানো গাছ-গাছালি ও বেড়া উচ্ছেদ করে সন্ত্রাসীরা জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এ ছাড়া আমি আমার ভাই তুহিন চৌধুরী ও মা মাহমুদা বেগমকে মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমার ভাই তুহিন চৌধুরী ও মা মাহমুদা বেগমকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
শাহীন চৌধুরী বলেছেন, ‘জমি তাদের কাছে বিক্রি করলে তারা প্রমাণ দিক। কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ দিচ্ছে না। তারা গায়ের জোর দেখাচ্ছে। আমাদের বাসায় জমি কেনা বাবদ ১০ লাখ টাকা রাখা হয়েছিল। সেটিও হামলার সময় সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে।’
এ ব্যাপারে কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ‘টাকা ছিনতাই, ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।’
ঘটনার পর থেকে আসামিরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। তাদের আটক করার চেষ্টা চলছে বলেন থানার ওসি লুৎফর রহমান।