মহিউদ্দিন হত্যা: চোখের জলে বিচারের দাবি ৩ প্রতিবন্ধী সন্তানের
৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:১৭
কুমিল্লা: শারীরিক ও মানসিক— প্রতিবন্ধী দুই ভাইবোন। আরেক বোনও শারীরিক প্রতিবন্ধী। এই প্রতিবন্ধকতা নিয়েই মানববন্ধনে এসে অশ্রুসজল চোখে বাবা হত্যার বিচার চাইলেন কুমিল্লার মেঘনার নিহত গোলাম মহিউদ্দিনের সন্তানেরা। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে শনিবার (৫ ডিসেম্বর) আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন (বিএইচআরসি) মেঘনা উপজেলা শাখা।
এই মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অসহায় সন্তানেরা। শনিবার সকালে উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে র্যালি নিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয়।
মানববন্ধনে মেঘনা উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের আহ্বায়ক মাহবুব উল্লাহ শিকদার বলেন, ‘মেঘনার শিবনগর গ্রামের গোলাম মহিউদ্দিন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। সংবাদ পেয়ে আমরা তার বাড়িতে গিয়ে দেখতে পাই তিনটি প্রতিবন্ধী সন্তান। পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন মহিউদ্দিন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর পরিবারটি পুরোপুরি অসহায়। যেহেতু এ হত্যামামলার আসামিরা এখনো আইনের আওতায় আসেনি, আমরা এই মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন; আপনারা পারেন সবকিছুই। আপনারা যদি চেষ্টা করেন এই অসহায় পরিবারের পক্ষে দাঁড়িয়ে আসামিরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের মুখোমুখি করতে পারেন।’
মেঘনা উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের উপদেষ্টা খালেক মাস্টার বলেন, ‘একটি সাধারণ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সংশ্লিষ্ট সবার কাছে জোর দাবি জানাই, এই হত্যাকাণ্ডের যেন কঠিন থেকে কঠিনতর বিচার হয়। যারা দোষী তাদের যেন ফাঁসি হয়।’
শুধু মানবাধিকার কর্মী নয়, উপজেলা চেয়ারম্যান, প্রতিটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ সব জনগণকে এ হত্যার বিচার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। মানববন্ধনে উপজেলার মানবাধিকার কর্মীরা, সাধারণ মানুষ ও নিহত মহিউদ্দিনের স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মহিউদ্দিন হত্যার ২২ দিন হয়ে গেছে কিন্তু এখনো কোনো আসামি ধরা পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে মহিউদ্দিনের পরিবার হতাশায় পড়ে গেছে। আসামিদের শিগগিরই আইনের আওতায় এনে ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিও কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, জমিসংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার জন্য গত ১২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) মুজিবসেনা ঐক্যলীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে সালিশের মধ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয় গোলাম মহিউদ্দিনকে। এ ঘটনায় ১৪ নভেম্বর (শনিবার) নিহতের স্ত্রী মাফিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা থানায় দায়ের করেন।