‘বাংলাদেশের সামনে এখন বড় হুমকি ধর্ম ব্যবসায়ীরা’
৬ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:০১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাংচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ধর্ম ব্যবসায়ীদের মূলোৎপাটনের দাবি জানিয়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা।
ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে রোববার (৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীতে অনুষ্ঠিত আলাদা সমাবেশ ও মিছিল থেকে এই দাবি জানানো হয়।
ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে পৃথকভাবে সমাবেশ করেছে নগর যুবলীগের দুটি অংশ। নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর নেতৃত্বে বিকেল তিনটায় প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। একই স্থান থেকে বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবমাননাকারীদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে নগর ছাত্রলীগ। যুবলীগের অপর অংশ বিকেলে পুরোনো রেল স্টেশন চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
দারুল ফজল মার্কেটের সামনে নগর যুবলীগের একাংশের সমাবেশে মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতির চেতনার অংশ। আমাদের জাতীয় চেতনাকে যদি কেউ কটূক্তি বা ভাঙার চেষ্টা করে আমরা দাঁতভাঙা জবাব দেবো।’
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন নগর যুবলীগের সদস্য হাফিজ উদ্দিন আনসারী, আকবর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন, একরাম হোসেন, এম আর ভূঁইয়া, শাখাওয়াত হোসেন স্বপন, মাসুদ রেজা প্রমুখ।
বিকেলে নগরের পুরনো রেল স্টেশন চত্বর থেকে যুবলীগের অপর অংশের আরেকটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা বলেন, মুজিব হত্যার নেপথ্যে যেসব দেশি-বিদেশি চক্র জড়িত ছিল, তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর এখন আঘাত করছে। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে আজ হৃদয়ের মুজিব অনেক বেশি শক্তিশালী। গভীর রাতে লোকচক্ষুর অন্তরালে যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে হাত দিয়েছে তাদের হাত ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। কোটি কোটি ভক্ত-অনুসারীদের হৃদয়ে আঘাত করে যে আগুন তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে, সে আগুনে ধর্ম ব্যবসায়ী-মৌলবাদী জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। মৌলবাদী-স্বাধীনতা বিরোধীদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
নগর যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মাহাবুব আলম আজাদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ ও মাহবুবুল হক সুমন, আনোয়ার হোসেন আজাদ, নেছার আহমেদ, আব্দুল আউয়াল, ওয়াহিদ হাসান, শেখ নাছির আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মামুনুল হকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
এদিকে ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিকেলে দারুল ফজল মার্কেট থেকে পৃথক একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে নগর ছাত্রলীগ। মিছিল শেষে এক সমাবেশে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় রাতের অন্ধকারে যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙেছে, তারা চিহ্নিত অপশক্তি, একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী গোষ্ঠী। তাদের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সীমা লঙ্ঘন করেছে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হুমকি এখন ধর্মীয় মৌলবাদ। হেফাজত এখন সরাসরি জামায়াত-শিবির পরিচালিত একটি জঙ্গিগোষ্ঠী। তাদের কঠোরভাবে দমন করতে হবে।’
নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সঞ্চালনায় সমাবেশে সংগঠনের সহ-সভাপতি তালেব আলি, নোমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম মানিক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবু তারেক রনি, শাহরিয়ার হাসান, এম এ হালিম সিকদার মিতু, ফয়সাল সাব্বির, আবদুল আহাদ, এম হাসান আলি, আলবিন নূর নাহিয়ান, শফিকুল আলম পারভেজ, বোরহান উদ্দিন ফরহাদ, শেখ শরফুদ্দিন সৌরভ, শুভ ঘোষ, মমসাদ চৌধুরী রাব্বি, আবুল কালাম আজাদ, মিজানুর রহমান, সালাহ উদ্দিন বাবু, আরাফাত রুবেল, মোশরাফুল হক চৌধুরী পাভেল, শেখর দাশ, ইমরান শাওন, ফয়সাল অভি, ইকবাল হোসেন নয়ন, সরকারি সিটি কলেজ, এম ই এস কলেজ, ইসলামিয়া কলেজ, কমার্স কলেজ, হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজ এবং বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।