Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর অস্ত্র দিয়ে ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যা’


৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:২১

ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর এবং স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত মেশিনগান ব্যবহার করে দূর থেকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন এক ইরানি রেভ্যুলেশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) ডেপুটি কমান্ডার আলি ফাদাভি। খবর রয়টার্স।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) ইরানের তাসনিম বার্তা সংস্থাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইআরজিসি’র ওই শীর্ষ কমান্ডার জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে কোনো সন্ত্রাসী উপস্থিত ছিল না। ফাখরিজাদেহ গাড়ি চালাচ্ছিলেন, ওই সময় একটি অস্ত্র তার দিকে তাক করা হয়। যেটিতে অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা লাগানো ছিল এবং সেটি তার উপর জুম করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

ওই কমান্ডার জানিয়েছেন, মেশিনগানটি একটি পিকআপ ট্রাকের ওপর রাখা ছিল এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। মেশিনগান থেকে শহীদ ফাখরিজাদেহকে লক্ষ্য করে ১৩টি গুলি ছোড়া হয়। এই অভিযানের সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ফেস ডিটেকটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। একই গাড়িতে ফাখরিজাদেহের কাছ থেকে মাত্র ২৫ সেন্টিমিটার দূরে তার স্ত্রী বসে ছিলেন। তার গায়ে কোনও আঘাতই লাগেনি।

এদিকে, ফাখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে পারেন এমন খবর ইরানের হাতে আগেই ছিল। তাই তার নিরাপত্তায় দেশটি সব ধরনের ব্যবস্থায়ই গ্রহণ করেছিল।

কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। ২৭ নভেম্বর রাজধানী তেহরানের কাছে একটি মহাসড়কে চোরাগোপ্তা হামলার শিকার হন ফাখরিজাদেহ। ফাখরিজাদেহের ওপর এ হামলার পেছনে ইসরায়েলের হাত আছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে ইরান।

এর আগেও, ইরানের চার পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছিল (২০১০ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে)। তখনও ইসরায়েলের দিকেই আঙুল তুলেছিল ইরান।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, এবারও ইরান ইসরায়েলের দিকেই অভিযোগের তীর ছুড়লেও ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এখনও দায় স্বীকার করে বা অভিযোগ অস্বীকার করে আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য দেওয়া হয়নি।

ওদিকে ইরান বলেছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে তারা সূত্র পেয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেফতারের খবর প্রকাশ পায়নি।

ফাখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ডের পরপরই কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেছিলেন, প্রথম একটি ট্রাক বিস্ফোরিত হয় এবং তারপর একদল বন্দুকধারী ফাখরিজাদেহের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে।

গত সপ্তাহে ইরানের নিরাপত্তা প্রধান আলি শামখানি বলেছিলেন, হামলাকারীরা বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করে ফাখরিজাদেহকে হত্যা করেছে। তারা হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না।

প্রসঙ্গত, ফাখরিজাদেহ ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন সংগঠনের প্রধান ছিলেন। তাকে ইরানের গোপন পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির হোতা বলে আখ্যায়িত করে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। কূটনীতিকরা তাকে ইরানের বোমার জনক বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন।

তবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর দফতর থেকে এখন পর্যন্ত মোহসেন ফাখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ২০১৮ সালের মে মাসে নেতানিয়াহু ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে অভিযোগ করতে গিয়ে মোহসেন ফাখরিজাদেহর নাম বলেছিলেন। সে সময় তিনি এই নামটি মনে রাখতে বলেছিলেন।

ইরান ইরানি রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি) ইসরায়েল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত মেশিনগান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর