প্রণোদনার ঋণ পরিশোধে ৫ বছর সময় চায় বিজিএমইএ
৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৫৮
ঢাকা: দুই বছরের পরিবর্তে প্রণোদনার ঋণ পরিশোধে পাঁচ বছরের সময় চায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক এ দাবি জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘তৈরি পোশাক শিল্পের কথা বিবেচনা করে প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানো দরকার। প্রণোদনা প্যাকেজের কিস্তি ২৪ মাসে পরিশোধ করার কথা। সেটি আগামী মাস থেকে পরিশোধ করতে হবে। এখন আমাদরে রফতানি আয় প্রায় ৩০ ভাগ কম। আমরা যাতে আগামী পাঁচ বছরে প্রণোদনার অর্থ পরিশোধ করতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আরেকটি প্রণোদনা প্যাকেজ করা প্রয়োজন।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ৩০ ভাগ অর্ডার কম। তারা ক্যান্সেল না বললেও পণ্য নিতে বিলম্ব করছে। কারণ ক্যান্সেল করলে তো আমরা চিৎকার চেচামেচি করি। তারা এখন সময় পিছিয়ে দিচ্ছে। যদি অর্ডারই থাকতো তাহলে রফতানি কমছে কেন? সবদিক মিলিয়ে আমাদের সহায়তা প্রয়োজন। এমনতো না যে আমরা ফেরত দেব না। নীতি সহায়তা প্রয়োজন।‘ তিনি আরও বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নতুন করে আমাদের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নতুন করে ক্রয়াদেশ কমছে। পোশাকের দরপতন হয়েছেন নজিরবিহীনভাবে। এ পরিস্থিতিতে আগামী মাস থেকে ঋণের অর্থ পরিশোধ করা একেবারেই সম্ভব হবে না।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর গত মার্চ থেকে পোশাক রফতানিতে অব্যাহত ধস এবং নতুন অর্থবছর থেকে তা কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে নতুন করে এ খাতের জন্য হুমকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সময়টিতে ব্যাপকভাবে দর কমে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পোশাকের দরপতন হয় পাঁচ দশমিক ২৩ শতাংশ। এছাড়া অক্টোবর মাসে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং নভেম্বরে প্রায় পাঁচ শতাংশ। একের পর এক পশ্চিমা ক্রেতারা দেউলিয়া হওয়ার আবেদন করায় অনেক রফতানিকারক বিপাকে পড়ছেন। ক্রয়াদেশ বাতিল না করে কৌশলে পিছিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছেন অনেকে। কিন্তু এটিকে বাতিলই বলা যায়।‘
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় দেশের শিল্প রক্ষায় সরকার প্রণোদনার আওতায় বিপুল অঙ্কের ঋণ দিচ্ছে শিল্প মালিকদের। এর আওতায় তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের বেতনভাতা পরিশোধের জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ পেয়েছে। ঋণ নেওয়ার ছয় মাস পর থেকে এই ঋণের অর্থ পরিশোধ শুরু হবে এবং পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা দুই বছরের স্থলে ঋণ পরিশোধে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় চায়। অন্যদিকে ঋণ পরিশোধে মোরাটরিয়াম (ঋণ গ্রহণের পর যে সময় পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ শুরু হয় না) ছয় মাসের বদলে এক বছর করার দাবি তাদের।